এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তিন বছরেরও বেশি সময় আগে শুরু হয়েছিল দুররাজপুরের রেংনা থেকে কুলতোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ। কাজ সম্পূর্ণ হওয়া দূরের কথা, এখনও পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকে পড়ে থাকা কালো পাথর বিছানের কাজও শুরু হয়নি। এই দীর্ঘ সূত্রিতায় ক্লান্ত এলাকাবাসী। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রায় বছর খানেক হল কাজে হাতই পড়েনি। খানাখন্দে ভরে গিয়েছে গোটা রাস্তাটি। ফলে যাতায়াতের সমস্যা দেখা দিয়েছে। অথচ কাগজে কলমে দু’বছর আগেই রাস্তাটি শেষ করার কথাছিল। |
এলাকাবাসীর দাবি যে মিথ্যা নয় তা দুবরাজপুরের তরুলিয়া মোড় থেকে রেংনা গ্রাম ঢোকার মুখে লাগানো প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার বোর্ড থেকেই পরিষ্কার। দু’টি বোর্ডের একটি মরচে ধরে অস্পষ্ট হয়ে গেলেও আপরটিতে লেখা রাস্তার নাম, বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ-সহ নানান তথ্য ঠিকঠাক পড়া যায়। সেখানেই শেষ করার তারিখ লেখা রয়েছে ১৯-১০-১০। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের প্রশ্ন, আর কত দিন লাগবে রাস্তার কাজ শেষ করতে? বিষয়টি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রিয়ঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বললেন, “ঠিক জানি না রাস্তার কাজ অদৌ শেষ হবে কি না। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সদুত্তর পাইনি।”
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না! ২০০৯ সালের অক্টোবরে যখন ৩৬২.৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল। খুশি হয়েছিলেন রেংনা, কুলতোড়, ভাটগ্রাম, বোধগ্রাম, কানদিঘি, বিদাইপুর-সহ অন্তত কুড়িটি গ্রামের মানুষ। |
ভেবেছিলেন বর্ষায় কাদা বা অন্য সময় লাল ধুলো মেখে যাতায়াত করতে হবে না। কিন্তু তিন বছরেও সেই রাস্তা না হওয়ার পরে রেংনার কুমারিশ ডোম, কানদিঘির সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়, ভাটগ্রামের প্রভাত ঘোষ পলসড়া গ্রামের শেখ আলাউদ্দিনদের ক্ষোভ, “বর্তমানে রাস্তাটির যা আবস্থা এর চেয়ে বরং আমাদের মোরাম রাস্তা ভাল ছিল।”
কেন বন্ধ রাস্তার কাজ? প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়র সঞ্জীব হালদারের দাবি, “যে ঠিকাদার কাজের দায়িত্ব পেয়েছে সে কাজ করছে না। এ ব্যপারে বহুবার চিঠি করেছি ওই ঠিকাদারকে। উত্তরও পাইনি। দিন দুই আগে কাজ না করলে ওই ঠিকাদারকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করা হবে। এ ব্যাপারে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র ইঞ্জিনিয়রকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।” তিনি বলেন, “শীঘ্রই কাজ শুরু না করলে সিনিয়র ইঞ্জিনিয়রের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|