ধুলোয় বিপর্যস্ত জনজীবন, খন্দ-পথ অবরোধে বাসিন্দারা
জাতীয় সড়কের পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। পথ জুড়ে অসংখ্য গর্ত। এতে যেমন দুর্ঘটনা ঘটছে, তেমনই ধুলোর ঝড়ে গোটা এলাকা অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার ধুলোর জেরে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। বহু বার এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাদের আবেদন নিবেদন করেও লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টানা তিন ঘণ্টা ফালাকাটা থেকে কোচবিহার যাতায়াতের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান ফালাকাটার মিল রোডের বাসিন্দারা। অবরোধ তুলতে পুলিশ যায়। ফালাকাটার যুগ্ম বিডিও তাপসকুমার পাল ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। রাস্তা মেরামতি করতে তারা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে যুগ্ম বিডিও বাসিন্দাদের বোঝালেও অবরোধ ওঠেনি। ধুলো বন্ধ করতে খুব দ্রুত ব্লক প্রশাসনের পক্ষে রাস্তায় জল ঢালা হবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধকারীরা শান্ত হন। যুগ্ম বিডিও বলেন, “বাসিন্দাদের এই দুরবস্থার কথা আমি জানি। রাস্তা মেরামতির বিষয়টি আমাদের এক্তিয়ারের বাইরে। তবে যাতে দ্রুত ওই রাস্তা মেরামত হয়, সে জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাব। মানুষ যাতে ধূলো থেকে মুক্তি পান সে জন্য নিয়মিত রাস্তায় জল দেব আমরা।”
নিজস্ব চিত্র
বাসিন্দারা জানান, মিল রোড ও দুলালের দোকান এলাকা থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন রোগী শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ধুলো থেকে শ্বাসকষ্টের রোগীদের সমস্যা তীব্র আকার নেয়। রাতের অন্ধকারে ওই রাস্তা পেরোতে গিয়ে মোটরবাইক আরোহীরা জখম হচ্ছেন।
৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের অন্তর্গত ফালাকাটার মিল রোড থেকে পুন্ডিবাড়ি হয়ে সহজে কোচবিহার যাতায়াত করা যায়। ফালাকাটা থেকে পুন্ডিবাড়ি পর্যন্ত ২৫ কিমি রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের নির্বাহী বাস্তুকার বিকাশ মণ্ডল বলেন, “দু’মাস আগে বদলি হয়ে এখানে এসেছি। রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ দেখে সম্প্রতি গর্ত মেরামতি করার জন্য ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। খুব দ্রুত রাস্তার কাছ শুরু হবে।” ফালাকাটা শহরের মিল রোড থেকে দুলালের দোকান এলাকা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তার পাশে ৪০০টি বাড়ি ও শতাধিক দোকান আছে। সেখানে নিয়মিত গাড়ি চলাচল করায় ধুলো ঝড়ে টিনের চাল থেকে আশেপাশের গাছের পাতায় পুরু ধুলোর আস্তরণ পড়ে গিয়েছে। বাড়ির মেঝে ভরে যাচ্ছে ধুলোয়। স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লবশঙ্কর রায়ের কথায়, “আমরা দূষণ মুক্ত পরিবেশ চাই। আমরা তা পাচ্ছি না। নিয়মিত ধুলোর কারণে বাড়িতে বাড়িতে সর্দি ও হাঁপানি-সহ ফুসফুসের অসুখ বাড়ছে। খুব শীঘ্র ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা প্রয়োজনে বিবস্ত্র হয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাব।”
দু’বছর ধরে ফুসফুসের জটিল অসুখে ভুগছেন গৃহবধূ জয়ন্তী বসু সরকার। তাঁর কথায়, “চিকিৎসক বলেছেন, ধুলোবালি থেকে দূরে থাকতে। বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ করেও লাভ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে পুজোর আগে থেকে বাপের বাড়ি গিয়ে রয়েছি।” এক মুদিখানার দোকান চালান অখিল ঘোষ। তাঁর কথায়, “স্থানীয় লোক ছাড়া বাইরের কোনও খদ্দের রাস্তা ও ধূলোর জন্য তেমন ভাবে দোকানে আসছেন না। আমার মত প্রায় সব ব্যবসায়ী প্রচণ্ড ক্ষতির মুখে পড়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.