ফের রাজনৈতিক গণ্ডগোলে নাম জড়াল আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোর স্বামী তথা তৃণমূল নেতা প্রবীর গড়াইয়ের।
গত কয়েক মাস আগে বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লক তৃণমূল কমিটির সভাপতি পদে নিমাই ঘোষকে সরিয়ে প্রবীরবাবুকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে দলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার কোতুলপুরের দিঘল গ্রামের দুই সিপিএম নেতা-কর্মীকেও মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রবীরবাবুর বিরুদ্ধে। যদিও প্রহৃতের পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে প্রবীরবাবুর নাম নেই। প্রবীরবাবুর দাবি, ‘জনরোষ’-এর জেরেই মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বাঁকুড়া-লাগোয়া আরামবাগের কঙ্কাবতী গ্রামে তৃণমূলের একটি সভা ছিল। অভিযোগ, সভা থেকে বেরিয়ে কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে সিপিএমের লাউগ্রাম লোকাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক রামশঙ্কর পালের বাড়িতে চড়াও হয়। বছর ষাটেকের বৃদ্ধ রামশঙ্করবাবু বলেন, “বেলা ১২টা নাগাদ প্রায় শ’দুয়েক লোক হই হই করে ঘরে ঢুকে পড়ে। ওরা জানতে চায়, আমি কেন এখনও সিপিএম ছাড়িনি। আমাকে কার্যত কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়েই শুরু হয় মারধর। প্রদীপ গড়াইয়ের নেতৃত্বে ঘটনা ঘটেছে।” বাধা দিতে গিয়ে প্রহৃত হন রামশঙ্করবাবুর স্ত্রী আরতি এবং ভ্রাতৃবধূ মমতা। ওই সিপিএম নেতা জানান, তাঁকে বাড়িতে একপ্রস্থ মারধর করে মোটর বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বেশ খানিকটা দূরে কঙ্কাবতী মন্দিরের সামনে। সেখানে আবার মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের লোকজন জখম নেতাকে উদ্ধার করে ভর্তি করেন হাসপাতালে। পুলিশ আসে।
জখম সিপিএম নেতার দাবি, প্রবীর গড়াইয়ের নেতৃত্বেই গোটা ঘটনাটি ঘটেছে। অন্য দিকে, সুকুমার মুর্মু নামে সিপিএমের আর এক কর্মীকেও প্রবীরবাবুর নেতৃত্বে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কোতুলপুরের বাসিন্দা তথা সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তাপস চক্রবর্তী বলেন, “অসুস্থ মানুষটাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হল। সুকুমারকে পুলিশের কাছে অভিযোগও জানাতে দেওয়া হয়নি।”
প্রবীরবাবুর দাবি, “সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের ফের দলে ফেরার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন ওই দুই সিপিএম নেতা-কর্মী। তাঁরা জনরোষের শিকার হয়েছেন।” |