কথা ছিল মাটি ফেলে রাস্তার পাইলিংয়ের কাজ করতে হবে। কিন্তু মাটির পরিবর্তে ঠিকাদার রাস্তার পাইলিংয়ের কাজে ছাই ব্যবহার করছেন, এমনই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন গ্রামের মানুষ। বিষয়টি নিয়ে বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়ার যদুরহাটি উত্তর পঞ্চায়েতের দফতরের সামনে ছাই ভর্তি বস্তা নিয়ে বুধবার বিক্ষোভেও সামিল হলেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে পঞ্চায়েত প্রধান, নির্মাণ সহায়ক এবং বিডিও প্রতিনিধির কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগে বিষয়ে নির্মাণ সহায়ক উৎপল সাহা এবং বিডিও প্রতিনিধি অমিত চক্রবর্তী বলেন, “পুজোর ছুটি থাকায় রাস্তার কাজের ঠিকমত দেখাশোনা করা যায়নি। পাইলিংয়ের কাজে ছাই ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।” |
ছাই ফেলে প্রতিবাদ। —নিজস্ব চিত্র। |
ব্লক এবং পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, একশ দিনের কাজের প্রকল্পে বাদুড়িয়ার যদুরহাটি উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর বাজার থেকে শ্রীরামপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ওই রাস্তা দিয়েই নারায়ণপুর, পিঙ্গিলেশ্বর, শ্রীরামপুর, মলয়াপুর, নাটুরিয়া, কুলবেড়িয়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। রাস্তা তৈরির জন্য কয়েকটি জায়গায় পুকুর, ডোবা থাকায় পাইলিং করাতে হচ্ছে। নির্মাণ কাজের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম বলেন, “সাতটি ধাপে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাস্তার কাজ হচ্ছে।” এলাকার মানুষেক একাংশের অভিযোগ, পাইলিংয়ের কাজে মাটির পরিবর্তে মুড়ি তৈরির কারাখানা থেকে ছাই এনে দেওয়া হচ্ছে। যা রাস্তার পক্ষে বিপজ্জনক। যে কোনও সময় রাস্তা ধসে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এরই প্রতিবাদে শতাধিক গ্রামবাসী পঞ্চায়েতের সামনে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কমল মণ্ডল, নজরুল ইসলামরা বলেন, “সরকারি টাকা নয়ছয় করে মাটির পরিবর্তে মুড়ি কারখানার ছাই ফেলে রাস্তার গর্ত বোজানো হচ্ছে। অবিলম্বে অপরাধীদের ধরে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।” তবে গ্রামবাসীদের আর একটি অংশ সফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গির ইসলামদের দাবি, রাস্তার পাইলিং থেকে ছাই উঠিয়ে পরিবর্তে সেখানে মাটি ফেলা হবে বলা হলেও কেউ কেউ তা নিয়ে অযথা আন্দোলন করছেন। আসলে সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গা গরম করে নিতে চাইছেন তাঁরা। উপপ্রধান খাদেমুল ইসলাম বলেন, “রাস্তার উপর দিয়ে আপাতত গাড়ি চলাচলের সুবিধার জন্যেই ছাই ফেলা হয়েছে শুনেছি। কিন্তু কেন মাটির বদলে ছাই ফেলা হল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” |