প্রতিবছর পুজোয় বনগাঁ মহকুমা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাহিত্য সংখ্যা নিয়ে প্রবল আগ্রহ থাকে বনগাঁবাসীর। যদিও এই সব সাহিত্য পত্রিকার লেখার নির্যাস ছড়িয়ে পড়ে বনগাঁর বাইরেও। এমনকী শহরাঞ্চলেও। তবে এ বার বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার বক্তব্য, প্রতিবারের মতো গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, কবিতা নিয়ে তাঁরা তাঁদের শারদ সংখ্যা সাজালেও প্রায় প্রত্যেকেই শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের প্রকাশনায় স্মরণ করেছেন সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক নিহত বরুণ বিশ্বাসকে। গণধর্ষণ কাণ্ডে সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে যাঁকে গুলি করে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা। |
‘আমাদের লোকালয়’ তাদের শারদ সংখ্যা করেছে বরুণবাবুকে নিয়ে। প্রচ্ছদে স্থান করে নিয়েছে সুটিয়া। সেখানে পোস্টারে রয়েছে, ‘বরুণ বিশ্বাসের রক্ত আমাদের রক্ত’। বরুণবাবুকে নিয়ে সংকলিত হয়েছে ১৬টি নিবন্ধ। সংকলনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্মৃতিকথা’। বরুণবাবুকে নিয়ে লিখেছেন সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার, বরুণবাবুর বড়দি প্রমীলা রায় ও শিক্ষক সুমন্ত কুমার চাকলাদার-সহ বরুণবাবুর সাহচর্যে এসেছেন এমন অনেকে। প্রত্যেকের কলমেই উঠে এসেছে বরুণবাবুর জীবনের নানা অজানা তথ্য। উঠে এসেছে তাঁর মানবিক কাজের নানা দৃষ্টান্ত। সঙ্গে বরুণবাবুর নানা সময়ের ছবি সংকলনটির অন্যতম আকর্ষণ। সম্পাদক চঞ্চল পাল জানালেন, “বরুণবাবুর মৃত্যু আমাদের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। এ বারের সংখ্যায় তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছি।”
ঐতিহ্য, পরম্পরা মেনে এ বারও বনগাঁর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শারদ উৎসব উপলক্ষে বহু পত্র-পত্রিকা, লিটল ম্যাগাজিন বা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে কবিতার সংকলন ‘পার্থিব’, ‘সাঁঝবেলা’, ‘চড়ুইপত্র’, ‘কালের রাখাল’, কবিতা বিষয়ক পত্রিকা ‘কবিতা আশ্রম’। কবিতা পাঠকদের ভাল লেগেছে অন্বেষা, শিস, বনগাঁ লোকালে, দিল্লি এক্সপ্রেস, বাল্মীকি। প্রবন্ধ, গুচ্ছ কবিতা, ভ্রমণ, রম্যরচনা নিয়ে সাজানো অন্বেষা। শিস পত্রিকার প্রবন্ধগুলি অত্যন্ত সময়োপযোগী।
প্রয়াত গল্পকার সমর মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এ বার শারদসংখ্যা করেছে ‘বনলতা’। ‘সুচেতনা’ এ বার তাদের শারদ সংখ্যা সাজিয়েছে প্রয়াত কবি দেবপ্রসাদ ঘোষের স্মরণে। প্রয়াত কবি জগন্নাথ লালাকে নিয়ে শারদসংখ্যা করেছে ‘সংকেত’। কবিকে নিয়ে লিখেছেন আর এক কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। প্রকাশিত হয়েছে কবি সুশান্ত ভট্টাচার্যের কাব্যগ্রন্থ ‘দাঁড়াও, পালিয়ে যেও না ভাল কথা’। ছড়া ও কবিতার সংকলন নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাসুদেব পালের কাব্যগ্রন্থ ‘খেয়ালী’। এ ছাড়াও প্রকাশিত পত্র-পত্রিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘তবু অভিমান’, ‘প্রতিবিম্ব’, ‘এখন চলতে চলতে’, ‘কাশফুল’, ‘রোপণ’। ‘আমি জেগে আছি’, ‘তারুণ্য’, ‘শিউলি ফুল’ প্রভৃতি। নজর কাড়া সুভ্যেনির উপহার দিয়েছে বেশ কিছু পুজো কমিটি। যেমন, ঐকান্তিক, বোধন, চন্দ্রবিন্দু, আগমনী, সৈকত, অভিযান, সংহতি, মধুকর, কণিষ্ক প্রভৃতি। |