|
|
|
|
পূর্বে দাবি সিপিএমের |
তৃণমূলের ভুলে অক্সিজেন দলে |
আনন্দ মণ্ডল • তমলুক |
শুধু রাজ্যে নয়, গত সাড়ে চার বছর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সহ-অধিকাংশ পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন তৃণমূল। অথচ, জেলায় উন্নয়নে আশানুরূপ কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ। উল্টে দুর্নীতি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার শাসকদল। এ হেন পরিস্থিতিতে তৃণমূলের উপরে সাধারণ মানুষের বিরূপ মনোভাব সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করবে বলে মনে করছে সিপিএম। বুধবার সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত পর্যালোচনা বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। দলের জোনাল কমিটি ভিত্তিক রিপোর্টেও সাংগঠনিক পরিস্থিতির উন্নতির ছবি উঠে এসেছে বলেই জেলা নেতৃত্বের দাবি। তবে, এখনই মারমুখী আন্দোলনের কথা ভাবছে না সিপিএম। জনসংযোগ বাড়িয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতির পক্ষেই তারা।
বুধবারে সিপিএমের এই বৈঠকে দলের রাজ্য নেতা রবীন দেব, দীপক সরকার ছিলেন। দু’জনেই এখন পূর্বে দলের সাংগঠনিক কাজ দেখভালের দায়িত্বে। এ দিনের বৈঠকে জেলায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। ২৩টি জোনাল কমিটির সম্পাদক এলাকা ভিত্তিক সাংগঠনিক পরিস্থিতির রিপোর্ট পেশ করেন। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী এগরা, বালিঘাই, চণ্ডীপুর, তমলুক, তমলুক গ্রামীণ, সুতাহাটা প্রভৃতি এলাকায় সাংগঠনিক পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। নন্দীগ্রাম ও খেজুরি জোনাল কমিটির সাংগঠনিক বৈঠক এলাকার বাইরে করতে হলেও জেলার অন্যত্র জোনাল কমিটির অফিসগুলি খোলা যাচ্ছে। নন্দীগ্রাম ও খেজুরির প্রায় দু’হাজার কর্মী অবশ্য এখনও ঘরছাড়া।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের প্রথম দিকে (রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন) পূর্বে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ২২ হাজার। ক্ষমতা হারানোর পর সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার। অর্থাৎ এক ধাক্কায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার দলীয় সদস্য কমে যায়। দলীয় সদস্য পদে থাকা অনেকে আবার নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। বুধবারের বৈঠকে জেলায় জোনাল কমিটি ভিত্তিক দলের সক্রিয় ও নিস্ক্রিয় সদস্যদের তালিকা পেশ করা হয়। জেলা নেতৃত্বের দাবি, গত জানুয়ারি মাসে জেলা সম্মেলনের সময় দলে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা যা ছিল, তা এখন অনেকটাই বেড়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের মতে, “ক্ষমতাসীন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন জনবিরোধী কার্যকলাপের জেরে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের একাংশ পুনরায় দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যা দলের পক্ষে বেশ আশাব্যঞ্জক।” আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করে তোলাই আপাতত লক্ষ্য সিপিএমের। তাই নিস্ক্রিয় সদস্যদের সক্রিয় করতে দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এ ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে এলাকায় যাঁদের ভাবমূর্তি ভাল, তাঁদের দ্বায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিন বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্য রবীন দেব, দীপক সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের বেশ কিছু পরামর্শ দেন। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের দুর্নীতি, এলাকার উন্নয়নে খামতির বিষয়ে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বোঝানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের। |
|
|
|
|
|