|
|
|
|
কোন্দলে আহত দুই |
কেশপুরে নজরদারি স্বয়ং মমতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার কেশপুর নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। পরিস্থিতি এমনই যে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখন থেকে মমতা নিজেই কেশপুরের উপর সরাসরি নজর রাখবেন। দলের ব্লক সভাপতিকে কেশপুর সম্পর্কে প্রতি মাসে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছেন দলনেত্রী। প্রশাসনিক স্তরেও কেশপুর নিয়ে খোঁজখবর তিনি নিচ্ছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। দু’টি রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কেশপুরে দলীয় সংগঠন জোরদার করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নেত্রী। তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, “দলনেত্রী নিজে কেশপুরের উপর নজর রাখছেন। প্রতি মাসেই আমাকে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছেন।”
বুধবারই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক তৃণমূল সমর্থককে ধান কাটতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বৃহস্পতিবার আবার কেশপুরের জগন্নাথপুর গ্রামে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি হয়। জখম হন দুই তৃণমূল সমর্থক শেখ মুজিবুদ্দিন ও মীর হাসিবুল। তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। এঁরা নেপাল ঘোষ ও গোলাম মোতার্জা গোষ্ঠীর লোক। অভিযোগ, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর (তপন অনুগামী) লোকজনই তাঁদের মারধর করেছে। |
শেখ মুজিবুদ্দিন |
মীর হাসিবুল |
|
গোলাম মোর্তাজার কথায়, “ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে মারধর করছে। ইছাইপুরের এক বর্গাদারকে ধান কাটতে দিচ্ছে না। আবার জগন্নাথপুরে আচমকা আমাদের অনুগামীদের মারধর করল।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দাবি, “বর্গাদারের বিষয়টি দু’টি পরিবারের বিবাদ। এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। আর জগন্নাথপুরের মারামারি হয়েছে নিজেদের মধ্যে।” যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করতে আবেদন জানিয়েছেন তপনবাবু। জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ধান কাটায় বাধা দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় মিটে গিয়েছে। এ দিন একটা মারামারি হয়েছিল। তদন্ত হচ্ছে। এলাকায় নজরদারি চলছে।” বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই কেশপুরে দলীয় কোন্দলে জড়িয়ছে তৃণমূল। বারবার গোষ্ঠী সংঘর্ষ, লুঠপাট, বাড়িতে আগুন, এমনকী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাও হয়েছে। গত দেড় বছরে চার বার ব্লক সভাপতি বদলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। উল্টে এক এক জন সভাপতির নেতৃত্বে নতুন নতুন উপদল গজিয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিনের শিক্ষক নেতা তপন চক্রবর্তী বর্তমানে ব্লক সভাপতি হয়েছেন। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। কেশপুরের মানুষ চান এই দলাদলি, অশান্তিতে দাঁড়ি পড়ুক। পালাবদলের পর থেকেই তৃণমূলের লাগাতার গোষ্ঠী সংঘর্ষে তাঁরা বিরক্ত, শঙ্কিতও। সামনে পঞ্চায়েত ভোট আসছে। তার আগে পরিস্থিতি কোন দিনে গড়াবে, সেটাই তাঁদের চিন্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নাগরিক বলেন, “আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুক। কেশপুরে আর অশান্তি চাই না।” |
|
|
|
|
|