ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ইপিএলে বিতর্কিত হারের শোধ চেলসি বাহাত্তর ঘণ্টা বাদেই তুলল। সেই নিজেদের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজেই। কিন্তু এই মহাম্যাচের গা থেকে বর্ণবৈষম্য-বিতর্কের কালো দাগ তোলা গেল না বুধবার রাতেও। উল্টে এ বার রেফারির বিরুদ্ধে তাদের ফুটবলারকে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগের পরিবর্তে চেলসি সমর্থকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে ম্যান ইউয়ের ওয়েলবেককে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে চেলসি কর্তৃপক্ষ। ম্যান ইউয়ের সমর্থকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ার, গ্যালারিতে পটকা ফাটানোর এবং আগের ম্যাচের বিতর্কিত রেফারি ক্লাটেনবার্গের নাম করে চেলসি ফুটবলারদের টিটকিরি দেওয়ার। |
আনন্দের লাফ হ্যাজার্ডের। এই পেনাল্টি গোলেই ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে যায়। ছবি: এএফপি |
তবে তিন দিন আগের প্রিমিয়ার লিগের মতোই উত্তেজক লড়াই হয়েছে ক্যাপিটাল ওয়ান লিগ কাপের এই ম্যাচেও। সে দিন ০-২ থেকে ২-২ করেও চিচারিতোর অফসাইড গোলে চেলসিকে বিতর্কিত হার হজম করতে হয়েছিল। গত রাতে আবার তিন-তিন বার এগিয়ে থেকেও ম্যান ইউকে অতিরিক্ত সময়ে ৪-৫ হেরে টুনার্মেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। তবে ফার্গুসনের দলের আসল কপাল পোড়ে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে। যখন ৩-২ এগিয়ে থাকা ম্যান ইউয়ের তরুণ এবং অনভিজ্ঞ সেন্ট্রাল হাফ স্কট উটন নিজেদের বক্সে রামিরেজকে কতকটা অহেতুক ফাউল করে চেলসিকে পেনাল্টি উপহার দিয়ে বসেন। যার থেকে ৯০ মিনিটেই ৩-৩ করেন এডেন হাজার্ড। এবং ম্যাচে কোমা থেকে বেঁচে ওঠার উৎসাহ আর উদ্দীপনায় অতিরিক্ত সময়ে স্টারিজ এবং রামিরেজ পরপর আরও দু’টো গোল করে চেলসিকে ৫-৩ এগিয়ে দেন। কিন্তু তখনও যেন নাটকের বাকি ছিল। নিশ্চিত জয়ের স্বস্তিতে মশগুল চেলসির জালে গিগস পেনাল্টি থেকে ম্যান ইউয়ের চতুর্থ গোলটি ঢুকিয়ে ৪-৫ করলে ফের আশঙ্কায় পড়ে চেলসি। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচ শেষ! ফার্গুসনের ছেলেরা আচম্বিত আবিষ্কার করেন গিগসের গোলটা অতিরিক্ত সময়ের শেষ লগ্নে, একেবারে ১২০ মিনিটে এসেছে। নতুন করে কিক-অফেরও আর প্রায় সময় নেই।
তবে ম্যাচের ৯টা গোলের ৩টে পেনাল্টি থেকে হওয়া এবং দু’দল মিলিয়ে ৯ জনের হলুদ কার্ড দেখার মধ্যেই স্পষ্ট, কী মারাত্মক লড়াই হয়েছে। ৩-৩ অবস্থায় রেফারি ম্যাসন চেলসিকে আরও একটা পেনাল্টি পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেন। চেলসির পক্ষে ডেভিড লুইজ (৩১মিঃ, পেনাল্টি), কাহিল (৫২), হাজার্ড (৯০, পেনাল্টি), স্টারিজ (৯৭) ও রামিরেজ (১১৬) গোল করেন। ম্যান ইউয়ের জোড়া গোল গিগসের (২২ ও ১২০মিঃ পেনাল্টি) এবং চিচারিতো (৪৩) ও নানি-র (৬৯)। রুনি এবং অস্কার বাদে দু’দলই প্রায় পুরো শক্তি নিয়ে নেমেছিল। অস্কারকে দ্বিতীয়ার্ধে চেলসি নামালেও রুনিকে বেঞ্চেও রাখেননি ফার্গুসন। হতাশ ম্যান ইউ বস বলেছেন, “কেউ যদি খেলার কয়েক সেকেন্ড আগেও ৩-২ জেতে, তার উচিত ম্যাচটাকে শেষ করেই আসা। আমাদের নিজেদের দোষ দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই।” |