বাগানের রিজার্ভ বেঞ্চ ফুল ফোটাচ্ছে
মোহনবাগান- ৪ (মৈথানি, অনিল, ভার্গব, স্নেহাশিস)
কালীঘাট- ১ (সিন হো)
ট্রেভর মর্গ্যানের মতো অতি-শক্তিশালী না হলেও, দ্বিতীয় দলের জন্য আর হা-হুতাশ করার প্রয়োজন নেই মোহনবাগানের। মণীশ ভার্গব-অনিল কুমাররা বৃহস্পতিবার বুঝিয়ে দিলেন, টোলগে-ওডাফা ছাড়াও গোলের ‘নীলম’ বা ‘স্যান্ডি’ উঠতে পারে।
ওডাফা-টোলগেদের জন্য ‘বল বাড়ানোর লোক নেই... বল বাড়ানোর লোক নেই’ বলে বুক-চাপড়ানোর যুগ মনে হচ্ছে শেষ। ব্যর্থতার আগুনে জ্বলতে জ্বলতে মণীশ মৈথানি-স্নেহাশিস চক্রবর্তীরা আরও সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছেন। বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল এবং সূক্ষ্ম পাসেরও তাই কোনও অভাব হচ্ছে না।
সন্তোষ কাশ্যপের জমানায় ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে যে সব ধোঁয়াশা ডানা বেঁধেছিল, করিম বেঞ্চারিফা আসছে আসছে রব উঠতেই সব উধাও। ফের বিপজ্জনক দেখাচ্ছে রাকেশ মাসিদের।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে মোহনবাগানের জার্সিতে প্রত্যাবর্তনের দিনেই চমকে দিলেন দীপেন্দু বিশ্বাস। মাত্র এগারো মিনিটের ছোট্ট ইনিংসে গোল করতে পারেননি ঠিক। কিন্তু দু’টো হেড এবং সাবিথের জন্য একটা পাস যা বাড়ালেন, তাতে বোঝা গেল ‘পিকচার আভি বাকি হ্যয় মেরে ইয়ার’। তিরিশ পার করলেও, গোলের খিদে এখনও তরতাজা।
এ ভাবেই বারবার কালীঘাট বক্সে হানা দিলেন মণীশরা। ছবি: উৎপল সরকার
আর নেপথ্যে যাঁর নাম লুকিয়ে আছে, সেই মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা না বললে হয়তো বাগানের কলকাতা লিগের নতুন ‘সিলসিলা’ অধরাই থেকে যাবে! ব্যর্থতার পাহাড়ে গলা পর্যন্ত ঢাকা একটা দল। প্রধান কোচ এখনও সরকারি ভাবে দায়িত্ব নেননি। যুবভারতীর গ্যালারিতে ‘জয় হো’-র আশায় ফুঁসছেন সমর্থকরা। তা সত্ত্বেও ওডাফা-নবি-ইচেদের বিশ্রাম দিয়ে দ্বিতীয় দল নামানো বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নেওয়াকে নম্বর দিতেই হবে। প্রচণ্ড সাহসিকতার পরিচয় তো দিলেনই, অসম্ভব ধৈর্য এবং উপস্থিত বুদ্ধির দিকটাও ফুটে উঠল মোহনবাগানের সহকারী কোচের। প্রতিপক্ষকে মারলেন মগজাস্ত্র দিয়ে।
ম্যাচ শুরুর এক মিনিটের মধ্যেই মণীশ মৈথানির প্রথম গোল। আট মিনিটে মণীশ ভার্গবের ২-০। শুরুতে পরপর দু’টে গোল যেন মাথা ঘুরিয়ে দেয় ফুটবলারদের। এ দিনও দিল। নিট ফল— ম্যাচের আধ ঘণ্টার মধ্যে ডেনসনদের গড়িমসি-র সুযোগ নিয়ে ব্যবধান কমিয়ে ফেলে কালীঘাট। ডেনসনের মিস পাস থেকে সিন হো-র ফটো ফিনিশ। ২-১ হওয়ার পর চাপে পড়ে মোহনবাগানের ছন্দটাই যেন কেটে গেল!
মাঝের কুড়ি মিনিট কালীঘাটের হাতের মুঠোয় চলে গেল ম্যাচ। হোক না ছোট দল, মোহনবাগানকে আটকাতে তিন বিদেশি নিয়েই নেমেছিলেন কালীঘাট কোচ মিহির বসু। রক্ষণে মেহরাজ-আইবরদের ভুলে দুই নাইজিরিয়ান ফেলিক্স আর ইনামুয়েলের একটা করে শট পোস্টেও লাগল। কিন্তু মৃদুলের ঠান্ডা মাথা বিপক্ষের সব ‘বিপ্লব’ শেষ করে দিল। ছোট ছোট পাস আর বল পজেশন দিয়ে কী করে প্রতিপক্ষকে ক্লান্তির খালে ঠেলে ফেলে দিতে হয়, সেটাই দেখালেন মৃদুল। আর কালীঘাটের দমের-ভাণ্ডারে টান পড়তেই জ্বলে উঠলেন মণীশ ভার্গব। চোখ ধাঁধানো গোল করলেন তিনি। বলটা মণীশ পেয়েছিলেন তিরিশ ডিগ্রি কোণে। কিন্তু মোহন-মিডিও ইনস্টেপের দুর্দান্ত সোয়ার্ভিং শট নিমেষের মধ্যে জালে জড়িয়ে গেল। ৪-১ হয় স্নেহাশিসের গোলে। বৃহস্পতিবার ম্যাচের পরে বেশ কয়েকজন সবুজ-মেরুন ফুটবলার বলছিলেন, “করিম স্যার আসার আগেই আমরা জয়টাকে অভ্যাসের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে চাই।”
করিম চাচার আসার গন্ধেই বাগানের চেহারা বদলে যাচ্ছে। এখন দেখার, ময়দানে তাঁর সশরীরে প্রত্যাবর্তন ঘটলে কী রকম বিস্ফোরণ হয়!

মোহনবাগান: শিল্টন, আইবর, বিশ্বজিৎ, মেহরাজ, রাজীব, ডেনসন (মাসি), স্নেহাশিস, ভার্গব, মৈথানি, স্ট্যানলি (দীপেন্দু), অনিল (সাবিথ)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.