গোল পোস্ট খুলে পড়ছে! জাল ছেঁড়া! মাঠে দর্শক নেই! ময়দান থেকে অনেক দূরে সাই কমপ্লেক্সের ঘেরাটোপের মধ্যে ‘বন্দি’ ঐতিহ্যের বেটন কাপের হাল দেখে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ধনরাজ পিল্লাই। এশিয়াডের সোনাজয়ী দলের অধিনায়ক বৃহস্পতিবার বলে দিলেন, “পরের বার এই টুর্নামেন্টে টিম নিয়ে আর আসব না। জঘন্য পরিকাঠামো, পরিকল্পনাহীন ব্যবস্থা আমাকে হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে।”
এয়ার ইন্ডিয়ার কোচ হয়ে এখন শহরে ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। এ দিন বিকেলে সাইয়ের মাঠে দাঁড়িয়ে শতাব্দীপ্রাচীন বেটন কাপের বর্তমান দুরবস্থা দেখে ধনরাজ বলছিলেন, “বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশন নিজেরা আজও একটা টার্ফ তৈরি করতে পারল না। সাইয়ের টার্ফ ভাড়া করে কোনও ক্রমে টুর্নামেন্ট হচ্ছে। তাও এক দিকের গোল পোস্ট খুলে পড়ছে। জাল ছেঁড়া। এগুলো ঠিক করতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি লাগে না। তবু, কেউ উদ্যোগ নেয় না।” |
কথা বলতে বলতে বারবার পুরনো স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন প্রাক্তন এশিয়া কাপ জয়ী দলের অধিনায়ক। বললেন, “আমরা যখন এই টুর্নামেন্ট খেলতে আসতাম তখনও দেখেছি মাঠে প্রচুর দর্শক আসত। সেরা দলগুলো আসত। এখন কী অবস্থা!” এর পর তাঁর আরও চমকপ্রদ মন্তব্য, “এত বড় একটা টুর্নামেন্ট। অথচ কোনও প্রচার নেই। সাধারণ দর্শক আসা দূরে থাক, টুর্নামেন্ট দেখতে প্রাক্তন কোনও হকি খেলোয়াড়ও আসে না। এই টুর্নামেন্ট খেলে কী লাভ?”
শুধু গুরবক্স সিংহের বি এইচ এ নয়, হকি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধেও এ দিন সরব হয়েছেন ধনরাজ। তাঁর মতে, হকি ইন্ডিয়া আর ইন্ডিয়ান হকি ফেডারেশনের মধ্যে ঝামেলার জন্যই ক্ষতি হচ্ছে ভারতীয় হকির। পাশাপাশি বিদেশি কোচ নিয়েও অসন্তুষ্ট চার বারের অলিম্পিয়ান। বললেন, “বিদেশি কোচ দিয়ে সত্যিই কোনও লাভ হচ্ছে? কোনও ফল পাওয়া যাচ্ছে?” তাঁর ক্ষোভ রয়েছে নির্বাচকদের ওপরও। অলিম্পিকের ব্যর্থতার জন্য দল নির্বাচনকেই দায়ী করছেন ধনরাজ। পাশাপাশি ভরত ছেত্রীর বাদ যাওয়া প্রসঙ্গে জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সাফ জানালেন, “ভরত কী ভাবে অলিম্পিক দলের অধিনায়ক হয়ে গেল সেটাই আমি বুঝিনি। ভরত ছেত্রীর আগেই দল থেকে বাদ পড়া উচিত ছিল।” নির্বাচকদের এক হাত নেওয়ার পাশাপাশি তাঁর ইচ্ছে জাতীয় দলকে কোচিং করানোর। “সব হকি খেলোয়াড়ই জাতীয় দলের কোচ হতে চায়। আমিও তাঁর ব্যতিক্রম নই।” |