|
|
|
|
বেহাল অর্থনীতি, সতীর্থদের দ্বারস্থ চিদম্বরম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সুদের হার কমানো নিয়ে তাঁর আর্জিতে কর্ণপাত করছে না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সংঘাতের বাতাবরণে একলা চলেই অর্থনীতির হাল ফেরানোর সংকল্প করেছেন তিনি। সেই কাজে আজ মন্ত্রিসভার সতীর্থদের সাহায্য চাইলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
গত রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলের পর আজ সব মন্ত্রীকে নিয়ে নিজের সাত রেসকোর্স রোডের বাড়ির পঞ্চবটীতে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তিনি প্রারম্ভিক বক্তৃতা করলেও বৈঠকে কার্যত প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে যেখানে চিদম্বরম বলেন, বৃদ্ধির হার বাড়ানোর কথা মাথায় রেখে প্রতিটি মন্ত্রককেই আরও সক্রিয় হতে হবে। যাতে বিনিয়োগের বাতাবরণ মজবুত হয়। সেই সঙ্গে যথাসম্ভব রাজস্ব বাড়ানো যায়।
চিদম্বরম জানান, বৃদ্ধি হার ও পরিমাণ বাড়াতে সরকার এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপ করেছে ঠিকই। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। তা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। তবেই আগামী বাজেটে সামাজিক প্রকল্পের জন্য যথাযথ অর্থ বরাদ্দ করা যাবে।
প্রসঙ্গত, সুদের হার কমানোর ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের সঙ্গে চিদম্বরমের সংঘাত এখন প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। বৃদ্ধির হার বাড়ানোর জন্য সুদের হার কমানোর ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে বার বার আর্জি জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তা না শুনে সুদের হার অপরিবর্তিতই রেখেছে। এই অবস্থায় গত পরশু চিদম্বরম বলেছিলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সহযোগিতা না করলে বৃদ্ধির হার বাড়াতে প্রয়োজনে কেন্দ্র একলা চলবে। চিদম্বরমের আজকের মন্তব্য সেই পরিপ্রেক্ষিতেই দেখা হচ্ছে।
আজ মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীও আর্থিক বিষয় নিয়ে আলোচনাতেই অগ্রাধিকার দেন। লোকসভা ভোটের আর দেড় বছর বাকি। ফলে সাহসী পদক্ষেপ করার জন্য হাতে আর বিশেষ সময় নেই। সেই কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি জানি আমাদের রাজনৈতিক ক্যালেন্ডারের বিরুদ্ধে কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু একই সঙ্গে এ-ও ভুললে যে চলবে না যে, আমাদের দেশ গড়ার দায়িত্বও রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখেই আপাতত অন্য সব চিন্তা ছেড়ে দিতে হবে। যেটুকু সময় রয়েছে তার মধ্যেই অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে নামতে হবে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের এ জন্য একে অপরের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।”
এরই পাশাপাশি নতুন মন্ত্রী বিশেষ করে প্রতিমন্ত্রীদের আরও বেশি কাজের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন মনমোহন। বস্তুত সরকার নির্বিশেষে চিরকালের অভিযোগ যে পূর্ণ মন্ত্রীরা তাঁদের অধীনস্থ প্রতিমন্ত্রীদের বিশেষ দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান না। সে কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী আজ বৈঠকে বলেন, “ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের অনুরোধ করছি, তাঁরা যেন প্রতিমন্ত্রীদের যথেষ্ট দায়িত্ব দিয়ে তাঁদের দক্ষতা ও যোগ্যতার পূর্ণ ব্যবহার করেন।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে সায় দিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার পরে বলেন, “প্রতিমন্ত্রীদের শুধু কাজের দায়িত্ব দিলে চলবে না, বড় ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মন্ত্রিগোষ্ঠীতেও সামিল করতে হবে। যাতে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বাড়ে।” |
|
|
|
|
|