গ্যাসের দাম বাড়িয়েও
পিছু হটল সরকার

তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিবিহীন সিলিন্ডারের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গভীর রাতেই প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার এই দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। কলকাতায় ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ২৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৯৫০ টাকা। রাজধানী দিল্লিতে তা ২৬.৫০ বেড়ে হয় ৯২২ টাকা। কিন্তু রাতে আচমকা সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয় ওই মূল্যবৃদ্ধি স্থগিত রাখা হচ্ছে। ভর্তুকিবিহীন সিলিন্ডারে বহাল থাকছে পুরনো দামই। হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত বদলের কারণটা আসলে কী, তা নিয়ে মুখ খোলেনি তারা।
প্রবল রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েই যে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হল মনমোহন সরকারকে তা অবশ্য মানছেন সকলেই। দাম বাড়ার কথা জেনে প্রত্যাশামতোই তৃণমূল, বিজেপি-সহ সমস্ত বিরোধী শিবির তো দিনভর কেন্দ্রকে দুষেছেই। তবে সব থেকে বেশি চাপ আসে কংগ্রেসের অন্দরমহল থেকেই। কারণ সামনের রবিবারই হিমাচলপ্রদেশের ভোট। অথচ তার মাত্র দু’দিন আগে সরকার কী করে এই জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে দিল, তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে দলের মধ্যে। অসন্তোষ চেপে রাখেনি কংগ্রেসের একটা বড় অংশ। ভোটের মুখে এটা যে ‘নিজের পায়ে কুড়ুল মারা’র মতোই হতে পারে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারেন তাঁরা। তাঁদের প্রশ্ন, অতীতে পেট্রোলের দামের মতো রাজনৈতিক স্বার্থে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়টিও আরও ক’দিন পিছিয়ে দিলে কী ক্ষতি হত! রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির এ দিন দাবি ছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দামের সঙ্গে সাযুজ্য রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। ফলে আরও একদফা রক্তচাপ বাড়ে গৃহস্থের। রান্নার অপরিহার্য উপকরণের আকাশছোঁয়া দামে বেশি ভুগবেন যাঁরা।
এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতারই প্রকাশ বলে এ দিন ফেসবুকের পাতায় ফের নিজের ক্ষোভ উগরে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মমতা বলেন, “সংখ্যালঘু সরকার হয়েও একের পর এক বড় বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে কেন্দ্র। যেগুলি সাধারণ মানুষের স্বার্থে আঘাত হানছে তীব্র ভাবে। ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া বা বারে বারে ভর্তুকিবিহীন সিলিন্ডারের দাম বাড়ানো সব ক্ষেত্রেই তেল সংস্থার সুবিধা করে দেওয়াই আসলে সরকারের মূল উদ্দেশ্য।” এই পরিপ্রেক্ষিতে ফের এ দিন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলিকে একজোট হয়ে দাঁড়ানোর ডাকও দেন তিনি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও বিষয়টির সমালোচনা করে বলেন, “মানুষের দৈন্যন্দিন জীবন জড়িয়ে আছে যে পণ্যের সঙ্গে, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেটির দাম বাড়ানো অনৈতিক।”
দিনভর এই বিক্ষোভ-বিরোধিতার নাটকের মধ্যেই এ দিন ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে মনমোহন সরকারকে হুমকি দেয় কেন্দ্রে তাদের অন্যতম শরিক এনসিপি-ও। দলের মুখপাত্র নবাব মালিক জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে ছ’টির উপরে বাড়তি আরও তিনটি ভর্তুকির সিলিন্ডার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে। না হলে দেশ জুড়ে বিক্ষোভে নামবেন তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.