কোচবিহারকে ঘাঁটি করে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সন্দেহ। সম্প্রতি কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে ধৃত এক বাংলাদেশি সহ তিন ব্যক্তিকে জেরায় ওই ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম শহিদুল ইসলাম, মহাবুল হক ও হোসেন আলি। ধৃতরা ভারতের বিভিন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা সেনা ব্যারাকের ছবি সংগ্রহ করে পাচারের কাজের দায়িত্বে ছিল বলে তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “এক বাংলাদেশি সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধৃতদের সঙ্গে আইএসআইয়ের যোগসাজশ রয়েছে এমন কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় দুজন কে ১৭ অক্টোবর ধরা হয় ও দ্বিতীয় দফায় হোসেন আলি ধরা পড়েন ২৬ অক্টোবর। পর্যায়ক্রমে সকলকেই মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলার পরে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। আজ, মঙ্গলবার ধৃতদের ফের আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহিদুলের বাড়ি বাংলাদেশের নিলোফামারি এলাকায়। প্রকাশ্যে রিকশা চালকের কাজ করলেও বেআইনিভাবে গরু পাচারের কারবারীদের সঙ্গে তাঁর যোগসাজশ ছিল। শহিদুল মেখলিগঞ্জের উছলপুখুরিতে ডেরা বেঁধে কিছু লোকের সঙ্গে গোপনে তিনি দেখা করেন। তাঁদের মধ্যে পুন্ডিবাড়ির হোসেন আলি ও উছলপুখুরির মহাবুল রয়েছেন। পুজোর আগে চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত এলাকা থেকে পুলিশ শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। মহাবুল এলাকায় কৃষিমজুর হিসাবে পরিচিত হলেও বাংলাদেশের বাসিন্দাদের অনেকেরই তার বাড়িতে আনাগোনা ছিল। শহিদুল নিজেও ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধরা হয় মহাবুল হককে। পুলিশের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই দুজনের কাছে ভারতের বেশ কয়েকটি সেনা ব্যারাকের ছবি সম্বলিত মোবাইল সেট মিলেছে। বিভিন্ন নকশা, সিম কার্ড ও ফোন নম্বর উদ্ধার করা হয়েছে। ওই দুজনকে জেরা করে ওই চক্রে জড়িত সন্দেহে কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ির বাসিন্দা হোসেন আলিকে চ্যাংড়াবান্ধা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গরু পাচারের কারবারে জড়িত থাকার সূত্রেই হোসেনের সঙ্গে ওই দুজনের সখ্যতা গড়ে ওঠে বলে পুলিশের সন্দেহ। পরে মোটা টাকার টোপ দিয়ে শহিদুলই বিভিন্ন তথ্য পাচারের কাজে হোসেন আলিকে কাজে নামায়। |