তোলা দিতে অস্বীকার করায় এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের দক্ষিণ কাচদহ গ্রামের বাসিন্দা ইশাক মণ্ডলকে (৪০) আশঙ্কাজনক অবস্থায় গত শনিবার রাতে কলকাতায় আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার রাতে তিনি মারা যান। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের ধরার দাবিতে সোমবার সকালে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ। অবরোধ তুলতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরানোরও চেষ্টা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বরূপনগরের বাসিন্দা শ্যামল দাস ওরফে ট্যাঁরা শ্যামল ও তার সাঙ্গোপাঙ্গোদের অত্যাচার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। তার বিরুদ্ধে খুন-ডাকাতি, চুরি-ছিনতাই, মাদক ব্যবসা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে তোলা আদায়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তেঁতুলিয়া খালধার এলাকা থেকে বেশ কয়েক কেজি গাঁজা-সহ ধরা পড়ে শ্যামল। তার পর থেকে সে সংশোধনাগারে। কিন্তু সেখান থেকেই সে সঙ্গীদের সাহায্যে তোলাবাজি চালাচ্ছিল। দিন কয়েক আগে শ্যামলের জামিনের জন্য ৫০ হাজার টাকা লাগবে বলে তার সাগরেদরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলাবাজি শুরু করে। সেই সূত্রে ফোন করা হয় ইশাক মণ্ডলকে। ইশাকের চাষবাস এ গরুর ব্যবসা রয়েছে। টাকা দেওয়ার অক্ষমতা জানানোর পরেও শ্যামলের সঙ্গীরা তাঁকে হুমকি দিতে থাকে বলে ইশাকের অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত তিনি চারঘাট পুলিশ চৌকিতে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এটা জানার পরে হুমকি আরও বেড়ে যায় বলে ইশাকের পরিবারের অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কাকা হোসেন মণ্ডল ও তাপস দাসের সঙ্গে চারঘাট বাজার থেকে মোটর সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন ইশাক। লবণগোলা গ্রামের মোড়ে দুই যুবক তাঁদের পথ আটকায়। এর পর তাদের একজন রিভলভার বের করে ইশাককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলি লাগে তাঁর পেটে। ভয়ে ইশাকের সঙ্গীরা পালিয়ে যান। পরে তাঁদের চিৎকারে ছুটে আসেন গ্রামের মানুষ। যদিও ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই রাতেই ইশাককে হাবরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায় আরজিকরে। সেখানে রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। |