রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • কলকাতা |
কখনও বরফশীতল, কখনও গলায় সেই চেনা আগুনে মেজাজ। আর তিন দিনের মধ্যে ইডেনে
নামতে হবে রঞ্জি অভিযানে। তার আগে আসন্ন রঞ্জি মরসুম, ‘গ্রুপ অব ডেথ’, বিতর্ক সব কিছু নিয়ে
বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি মুম্বই থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে যা বললেন... |
প্রশ্ন: গত দু’বছরে সর্বভারতীয় ক্রিকেট থেকে চারটে ট্রফি তুলেছে বাংলার ক্রিকেটাররা। কিন্তু ১৯৮৯-’৯০-এর পর রঞ্জি ট্রফি আজও ঢোকেনি। শেষ বার তো মাত্র ৩৫ রানের জন্য কোয়ার্টার ফাইনাল হাতছাড়া হয়েছে। ব্যর্থতার পাঁচিল এ বার ভাঙা যাবে?
মনোজ: দেখুন, গত বার ৩৫ রানের জন্য কোয়ার্টার ফাইনাল হয়নি বিশ্বাস করি না। বরং বলব, আম্পায়ারের একটা ভুল সিদ্ধান্ত সব শেষ করে দিয়েছিল। আম্পায়ারদের দোষ দিচ্ছি না। ভুল হতেই পারে। কিন্তু ভেবে দেখুন, রঞ্জি না জিতলেও আমরা কিন্তু ভাল খেলছি। পরপর দু’বার দলীপ জেতা, মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি জেতা, ইন্ডিয়া কিংবা ইন্ডিয়া ‘এ’ দলে তিন-চার জনের বাংলা থেকে ঢুকে পড়া, বাংলা ক্রিকেটের দিকনির্দেশ তো এগুলোই করে দিচ্ছে।
প্র: কিন্তু এ বছর তো রঞ্জির গ্রুপ আরও কঠিন। ‘মৃত্যু’ গ্রুপ বললেও কম বলা হয়। রাজস্থান, মুম্বই, সৌরাষ্ট্র, গুজরাত...কে নেই?
মনোজ: তিন বছর আগে প্রশ্নটা করলে বলতাম হ্যাঁ, এই টিমগুলো আমাদের ভোগাবে। চিন্তায় আছি। কিন্তু অতীতের বাংলার সঙ্গে আজকের বাংলাকে মেলাবেন না। আমরা এখন গ্রুপে কারা আছে, সে সব নিয়ে ভাবি না। বরং বাকিরা ভাবে গ্রুপে বাংলা আছে। এখন ওরাই ভয় পায়।
প্র: বোঝা গেল। কিন্তু সৌরভকে আপনারা এ বার পাচ্ছেন না। তার উপর প্রথম ম্যাচেই রাজস্থান। যারা কি না শেষ দু’বারের চ্যাম্পিয়ন। ঘাড়ের উপর চাপের এভারেস্ট মনে হচ্ছে না?
মনোজ: এটা ঠিক যে দাদি টিমে থাকলে ক্রিকেটার কাম মেন্টর কাম গাইড, সব কিছুই একা সামলে দেয়। ওর মতো ব্যক্তিত্বকে মাঠে তো মিস করবই। কিন্তু দাদিকে ছাড়া এগনোও একটা চ্যালেঞ্জ। দায়িত্ব অনেক বাড়বে জানি, তবে আমি চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছি।
আর রাজস্থান টিম নিশ্চয়ই ভাল। ওদের হাতে চার-পাঁচজন দুর্ধর্ষ ব্যাটসম্যান আছে। কিন্তু আমার টিমের দিকেও তাকান। দেশের সেরা পেস অ্যাটাক আমার হাতে। দিন্দা আছে, সামি, বীরপ্রতাপ আছে। সংক্ষেপে বলি, আমাদের বারুদ ঠাসার কাজটা কিন্তু শেষ। এখন শুধু ট্রিগারটা টিপব! |
প্র: আর বিতর্ক? সেটাকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করানো যাবে? আপনি রঞ্জিতে নামলেই তো একটা না একটা বিতর্ক বাঁধে।
মনোজ: কেউ ইচ্ছে করে বিতকের্র্ জড়াতে চায়? আমি নিজেই বা চাইব কেন? কিন্তু যখন আমার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে, চুপচাপ মেনে নেওয়া সম্ভব হয় না। আসলে কিছু লোক আছে যারা আমার নামে লাগাতার খারাপ কথা বলে, খারাপ ধারণা ছড়িয়ে আমার ইমেজের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। সবাই এখন বিশ্বাস করে মনোজ তিওয়ারি মানেই বিতর্ক। যেটা সত্যি নয়। যারা এ সব কথা বলে, তারা বিশেষ ক্রিকেট খেলেছে বলে মনে হয় না।
প্র: সিনিয়রদের বাদ দেওয়া নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। আপনার কি মনে হয়, এটা ঠিক হল? নাকি ভুল?
মনোজ: এই প্রশ্নের জবাব সিএবি এবং নির্বাচকরাই দিতে পারবেন।
প্র: শেষ প্রশ্ন। হালফিলে আপনার একটা নাম হয়েছে। মনোজ ‘ম্যারাথন’ তিওয়ারি। ইডেনে গত বছর দিল্লির বিরুদ্ধে ২৬৭ করার পরই চালু হয়েছে নামটা। কিন্তু লাভ তো বিশেষ হয়নি। সেই ইন্ডিয়া ‘এ’ বা বড়জোর জাতীয় দলের স্কোয়াডে।
মনোজ: বিকল্প রাস্তাও কি আছে? আমি নিজে জানি টেস্ট ক্রিকেটের জন্য তৈরি। কিন্তু বসে থাকলে তো চলবে না। সেঞ্চুরি নয়, ডাবল সেঞ্চুরি দরকার।
প্র: মানে, এ বছরও ২৬৭-র মতো অমর ইনিংস আসছে?
মনোজ: নিশ্চয়ই। |