চন্দননগরে ব্যবসায়ী খুনে গ্রেফতার চালক-সহ তিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
প্রথমে নমস্কার জানানো, তার পরে কোলাকুলি এবং সব শেষে চন্দননগরের ব্যবসায়ী পিঙ্কু সরকারকে গুলি করে খুন করা হয়। গত শনিবারের ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পিঙ্কুবাবুর গাড়ির চালক-সহ তিন জনকে গ্রেফতারের পরে জেরায় এমনই তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।
রবিবার রাতে চন্দননগরের নন্দীবাগান এলাকার বাসিন্দা, পিঙ্কুবাবুর গাড়ির চালক বিজন দাসকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত বাকি দু’জনের নাম নবীন রায় ওরফে ভিকি এবং রবি যাদব ওরফে পিঙ্কি। তাদের ধরা হয় উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলা এলাকা থেকে। ওই এলাকাতেই তাদের বাড়ি। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা কবুল করেছে, জমিজমা নিয়ে শত্রুতার জেরে খুন করা হয় পিঙ্কুবাবুকে। সোমবার ধৃতদের চন্দননগর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তিন জনকেই ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ওই তিন জনকে ধরেছে। বিজনের বিরুদ্ধে নানা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। ওই ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত বলে মনে হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে তাদের ধরা হবে।” |
চন্দননগর স্টেশনের অদূরে দক্ষিণপাড়া সুভাষপল্লি এলাকার বাসিন্দা পিঙ্কুবাবু জমি কেনাবেচার দালালির কাজ করতেন। পাশাপাশি, পুকুর লিজ নিয়ে মাছের ব্যবসাও করতেন। শনিবার সকালে তিনি নিজের গাড়ি ধোয়ামোছা করতে দেন বাগবাজারের কাছের একটি পেট্রোল পাম্পে। সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি ফের পাম্পের কাছে আসেন। তখনই গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়। দু’টি গুলি তাঁর শরীরে লাগে। একটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় পিঙ্কুবাবুকে প্রথমে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানোর সময়ে তিনি মারা যান। পুলিশের দাবি, জেরায় বিজন জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালানোর সুবাদে সে পিঙ্কুবাবুর বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠেছিল। শনিবার খুনের আগে সে ফোনে পিঙ্কুবাবুকে আড়াইশো টাকা নিয়ে পাম্পে আসতে বলে। পিঙ্কুবাবু আসার আগেই বিজন ভিকি এবং পিঙ্কিকে ‘গাছ পোঁতা হয়ে গিয়েছে। এ বার কেটে ফেলতে হবে’ বলে ফোনে ডেকে নেয়। পিঙ্কুবাবু পাম্পে পৌঁছলে বিজন ভিকি ও পিঙ্কির সঙ্গে পিঙ্কুবাবুর আলাপ করিয়ে দেয় বন্ধু বলে। ভিকি পিঙ্কুবাবুর সঙ্গে কোলাকুলি করে তারপরেই গুলি চালায়। পিঙ্কুবাবু পালানোর চেষ্টা করেও পারেননি। ভিকি আরও দু’টি গুলি চালায়। জমিজমা নিয়ে শত্রুতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। |