কাবুলি যুবকের অপমৃত্যু শহরে
স্বাভাবিক মৃত্যু হল বাঙালি বৌয়ের কাবুলি দেওরের। মৃতের নাম ইশা ওরফে মুশা খান (২৯)। সোমবার সকালে ধর্মতলা এলাকায় লেনিন সরণির পাশে বন্ধ থাকা একটি সিনেমা হলের ভিতরে তাঁর দেহ মিলেছে।
১৯৮৯ সালে সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বাঙালি তরুণী জাঁবাজ খান নামে এক কাবুলিকে বিয়ে করে আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন। ইশা জাঁবাজের ভাই। অর্থাৎ, সুস্মিতাদেবীর নিজের দেওর। কলকাতায় সুদে টাকা খাটানোর বৈধ কারবার করতেন ইশা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২২ জানুয়ারি থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না। বৌবাজার থানায় জাঁবাজ নিখোঁজ-ডায়েরি করেন। তিনি এ দিন তাঁর ভাইয়ের দেহ শনাক্ত করেছেন। পুলিশ জানায়, ওই সিনেমা হলের ভিতর থেকে যে দেহটি মেলে, তা প্রায় কঙ্কালে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ইশার ডান পায়ের কড়ে আঙুল ছিল না। তা দেখে তাঁকে শনাক্ত করা হয়।
ইশা খান
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, সিনেমা হল লাগোয়া একটি বাড়ির তিনতলায় খুড়তুতো কয়েক জন ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন ইশা। সিনেমা হলের ব্যালকনিতে তাঁর দেহ পড়েছিল। ব্যালকনির ফলস্ সিলিংও ছিল ভাঙা অবস্থায়। তা দেখে পুলিশের একাংশের অনুমান, কোনও ভাবে পা পিছলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। কিন্তু যে ঘরে ইশা থাকতেন, সেখান থেকে লোহার সিঁড়ি বেয়ে, ছাদের আলসে পেরিয়ে কী ভাবে তিনি ব্যালকনির উপরের ছাদে গেলেন, তা এ দিন রাত পর্যন্ত বুঝতে পারেনি নিউ মার্কেট থানার পুলিশ বা কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। পুলিশ জানায়, ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে ইশার মৃত্যুর কারণ জানা যেতে পারে।
কী ভাবে উদ্ধার হল ওই কাবুলির মৃতদেহ? পুলিশ জানায়, সিনেমা হলের প্রাক্তন মালিক দেবেন্দ্র সায়গল হলের উপরেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। মিস্ত্রি লাগিয়ে তিনি সিনেমা হলের বাতানুকূল যন্ত্রের ‘ডাক্ট’ খোলাচ্ছিলেন। তারকেশ্বর নামে ওই মিস্ত্রিই এ দিন ব্যালকনিতে কাজ করতে গিয়ে মৃতদেহটি দেখতে পান।
ইশার বৌদি সুস্মিতা এ দিন নাগেরবাজারের কাছে নিজের ফ্ল্যাটে বসে জানান, আফগানিস্তানের পকতিকা জেলার সারানা গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। ইশা ছোটবেলায় সেখানেই থাকতেন। পরে তিনি বাবার সঙ্গে অসমে চলে যান এবং সেখানে সুলতান নামে এক তরুণীকে বিয়ে করেন। বছর তিনেক আগে স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে সারানা গ্রামে রেখে তিনি ৫এ লেনিন সরণিতে খুড়তুতো ভাইদের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তাঁর দেওরের কোনও শত্রু ছিল না বলে দাবি সুস্মিতাদেবীর। তাঁর অভিযোগ, লালবাজার, ভবানী ভবন-সহ একাধিক জায়গায় গিয়ে তিনি দেওরের খোঁজ এনে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, কোনও পুলিশকর্তার কাছ থেকেই তিনি ঠিক মতো সাহায্য পাননি।
কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (মধ্য) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, “কী ভাবে ইশার মৃত্যু হল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, টাকা ধার দেওয়া নিয়ে কোনও গোলমালের জেরে কেউ ইশাকে খুন করে সিনেমা হলের ভিতরে ফেলে দিয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.