ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসের কাজে বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে আজ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে আশ্বাস দিলেন বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
শেখ হাসিনা সরকার এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। এবং সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও করেছেন হাসিনা। কিন্তু খালেদা জমানা সম্পর্কে ভারতের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর ছিল না। এ-হেন খালেদা সাত দিনের ভারত সফরে এসে আজ মনমোহনকে বলেন, সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে দুই দেশ এক সঙ্গে লড়াই করা উচিত। এবং বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের মাটিকে ভারতের বিরুদ্ধে কোনও ভাবেই ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। বিএনপি চেয়ারপার্সনের এই আশ্বাসে উৎসাহিত দিল্লি।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন প্রতিবেশী দেশের শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। বাংলাদেশে আর এক বছরের মাথায় নির্বাচন। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যে ভাবে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া বইছে, তাতে ক্ষমতায় ফেরার ব্যাপারে খালেদা যথেষ্টই আত্মবিশ্বাসী। বিরোধী নেত্রী হিসেবে এসে তাই ভারতের মন জয় করতে চাইছেন তিনি।
প্রতিবেশী রাষ্ট্রে যদি ক্ষমতা বদল ঘটে, তার জন্য তৈরি থাকতে চাইছে ভারতও। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, খালেদার এই সফরে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের সঙ্গে ভারতের নিবিড় যোগাযোগের আধার রচিত হল। আগে মনে করা হত খালেদা সরকার ভারত-বিরোধী কাজে মদত দেয়। খালেদা জিয়ার এই সফর সেই ধারণা পাল্টানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিদেশ মন্ত্রকের ওই কর্তা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর খালেদার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, নতুন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে নতুন দুই প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি ও আবু হাসেম খান চৌধুরী। সেখানেও খালেদা জিয়া স্পষ্ট জানান, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই এগোতে চান তিনি। কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেবেন না ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসকে।
এই মধ্যাহ্নভোজের আসরে অবশ্য তিস্তা বা অন্য বিষয় নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। কিন্তু বিএনপি সূত্রের খবর, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিস্তা-সহ দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো, টিপাইমুখ বাঁধ, সীমান্ত নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা মিটিয়ে ফেলার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশির মৃত্যু নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন খালেদা। |