জলপাইগুড়ি শহরে ডেঙ্গি বেড়ে চলেছে
ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে জলপাইগুড়িতে। গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়াতে শুরু করে শহরে। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও প্রতিদিনই শহরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে ডেঙ্গির জীবাণু মেলার খবর আসতে থাকায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চলতি মাসের প্রথম দিন পর্যন্ত সরকারি ভাবে জলপাইগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকায় ৬৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু জলপাইগুড়ি পুর এলাকার মধ্যেই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯। গত সপ্তাহের রিপোর্ট ধরলে সেই সংখ্যা বাড়বে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে। যদিও বেসরকারি ভাবে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা আশি পেরিয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “প্রথম দিকে দেখা গিয়েছে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই রোগ সংক্রমণের আগে কলকাতা থেকে ফিরেছেন। কিন্তু এখন আক্রান্তের বেশির ভাগই শহরের বাসিন্দা। যাঁরা হালে কলকাতায় যায়নি। অর্থাৎ শহর ও লাগোয়া এলাকায় সংক্রমণ উদ্বেগজনক আকার নিয়েছে। বিষয়টি আমরা পুরসভাকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য দফতরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।” এদিন শনিবার শহরের থানা মোড় এলাকার একটি বেসরকারি প্যাথোলজিকাল পরীক্ষা কেন্দ্রে ২ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে, গত শুক্রবার ওই কেন্দ্রেই তিন জনের রক্তে রোগের জীবাণু নিলেছে। এই কেন্দ্রের থেকে স্বাস্থ্য দফতরকে পাঠানো রিপোর্টে জানানো হয়েছে, অক্টোবর মাসের প্রথম দিন থেকে শনিবার পর্যন্ত তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ১০ জনের রক্তে রোগের জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে শহরের দিনবাজার এলাকার একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে চলতি মাসের প্রথম ৬ দিনে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে ৪ জনের রক্তে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে গত বছর শহর এলাকায় ১৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। চলতি বছরে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় বাছাই করা আধিকারিক ও কর্মীদের নিয়ে পৃথক দল তৈরি করেছে, জেলা স্বাস্থ্য দফতর, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেই এই দলটির কাজকর্ম দেখভাল করছেন। পুরসভার সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন পুর কতৃপক্ষকে রিপোর্ট পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “পুরসভার তরফে প্রতিদিনই শহরে মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। শহর জুড়েই জরুরি ভিত্তিতে আগাছা সাফাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে সব জলা জায়গায় মশা জন্মাতে পারে সেগুলিও সাফ করা হচ্ছে। পাশাপাশি যে এলাকাগুলি থেকে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর এসেছে, সেখানে পুরসভার তৈরি করা বিশেষ দল নিয়মিত যাচ্ছে এবং বেশি করে ব্লিচিং, মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে।” শহর জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকলেও সরকারি ভাবে বাসিন্দাদের সচেতন করার উদ্যোগের খামতি রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। সমাজকর্মী সুব্রত সরকার বলেন, “প্রথম কয়েকদিন শহরে মাইকে ঘোষণা করা হয়েছিল, তার পরে সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অথচ ডেঙ্গির প্রকোপ কমানোর প্রধান হাতিয়ারই হল সচেতনতার প্রসার।” আরেকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মুখপাত্র রাজা রাউত বলেন, “দু’মাস ধরে শহরে সংক্রমণ চললেও এখনও নিয়ন্ত্রণ করা গেল না। এই বিষয়টি সকলেরই ভেবে দেখা দরকার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.