সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেলকে শুক্রবার বিদায় সংবর্ধনা দিল রাজ্য সরকার। আর কেন তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল সঙ্গে সঙ্গেই। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে এমন ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেনি।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য: এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা অবসর নেওয়ার আগেই অন্যত্র বদলি হয়ে গিয়েছেন। ফলে তাঁদের বিদায় সংবর্ধনার প্রশ্ন ওঠেনি। কেউ কেউ এমনও বলছেন যে, সম্প্রতি দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচএস কাপাডিয়া অবসর নেওয়ার পরে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। ফলে এ নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই।
প্রসঙ্গটি তুলে এ দিন বিচারপতি পটেল নিজেও তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “রাজ্য সরকার আমাকে সংবর্ধনা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। মহারাষ্ট্রে কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতিদের চিরদিনই রাজ্য সরকার বিদায় সংবর্ধনা জানায়।” |
এ দিনের অনুষ্ঠানে আর একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা। সেখানে বিচারপতি পটেলের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভবিষ্যতে আমরা ওঁকে কেন্দ্রে আইনমন্ত্রী হিসেবে দেখতেই পারি। এমনকী, কলকাতাতেও তাঁকে ফের দেখা যেতে পারে, আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে।” বিচারপতি পটেল তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “দেশ বাংলা থেকে রাষ্ট্রপতি পেয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পেয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলা থেকে প্রধানমন্ত্রীও পাব বলে আশা রাখছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিচারপতি পটেলের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। যে প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “আমি প্রায়ই বিচারপতি পটেলের বাড়ি যেতাম। উনি আমার খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে খুব যত্নবান। উনি নাগপুর চলে যাবেন। ওঁর অভাব আমি খুব বেশি করে অনুভব করব।” উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে বিচারপতি পটেলের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মমতা বিশেষ বিমানে নাগপুর গিয়েছিলেন, কয়েক ঘণ্টার জন্য। ঘটনাচক্রে এ দিন ছিল বিচারপতি পটেলের জন্মদিন। সেই উপলক্ষে অনুষ্ঠানমঞ্চেই কেক কাটা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আগে বলতে উঠে বিচারপতি পটেল রাজ্যের বর্তমান সরকারের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। “এ রাজ্যে কোনও পরিবর্তন আসতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু পরিবর্তন আসার পরে কাজ খুব দ্রুত হয়। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যখন যা প্রয়োজনের কথা বলেছি, তিনি সেই প্রয়োজন অতি দ্রুত মিটিয়েছেন।” বলেন তিনি। |