ইচ্ছে ছিল গ্রামে মুক্তমঞ্চ তৈরি করবেন। স্বরচিত গান গেয়ে তিনি নিজেই সেটির উদ্বোধন করবেন। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেই মঞ্চের কাজের তদারকিও করতেন। কিন্তু তার আগেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুবলচন্দ্র বিশ্বাসের। শুক্রবার বাদুড়িয়ার পিয়াড়া তেঘরিয়া হাইস্কুল হাইস্কুল মাঠে উদ্বোধন হয়েছে তাঁর তৈরি মুক্তমঞ্চের। ‘সুবলচন্দ্র বিশ্বাস স্মৃতি মুক্তমঞ্চ’-এর উদ্বোধনে এসে এমন উদ্যোগের প্রশংসা করলেন রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়। এ দিনের অনুষ্ঠানে সুবলবাবুর লেখা ‘জীবন-পথে’ বইটি সকলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন এলাকার অন্য স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক, স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক, সভাপতি-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। স্বরূপনগরের ভাদুড়িয়া গ্রামে বাড়ি সুবলবাবুর। |
গ্রামেরই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। গরিব মানুষগুলো যাতে পুজোর দিনগুলিতে আনন্দ করতে পারেন সে জন্য বেতনের টাকা দিয়ে কিনে দিতেন নতুন পোশাক। কেউ অসুস্থ হলে বা কারও অভাবের জন্য পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁর পাশে দাঁড়াতেন সুবলবাবু। গ্রামবাসীদের নিয়ে নাটক-যাত্রা করা ছিল তাঁর নেশা। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে পারদর্শী হওয়ায় গ্রামের ছেলেমেয়েদের নিয়ে চলত তাঁর গানের আসর। ছেলেমেয়েরা যাতে নাটক-যাত্রা, গানবাজনা থেকে উৎসাহ হারিয়ে না ফেলে সে জন্য গ্রামে মুক্তমঞ্চ তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি। প্রাক্তন শিক্ষকের প্রস্তাব শুনে এগিয়ে এসেছিলেন পিয়াড়া তেঘরিয়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের সামনের জমিতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয় মঞ্চ। কাজ যখন প্রায় শেষের পথে সেই সময় একদিন শিক্ষকদের সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে ফেরার পথে মোটর বাইকের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন তিনি। পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। |