কলেজ-ভোট নিয়ে গণ্ডগোল চলছেই
লেজ নির্বাচন ঘিরে অশান্তি চলছেই দুই মেদিনীপুরের বিভিন্ন কলেজে। শুক্রবার মনোনয়ন তোলা নিয়ে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল কলেজে। বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুর শহরে এক এসএফআই নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। আবার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র ছেলেরা মনোনয়ন তুলতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে এসএফআই। মহিষাদল রাজ কলেজেও এসএফআইয়ের দুই সমর্থককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে ছাত্রসংসদের ভোট নিয়ে ক্রমশই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে কলেজগুলি।
আগামী ১৮ অক্টোবর ঘাটাল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র তোলার কাজ। শনিবার জমা দেওয়ার শেষ দিন। উল্লেখ্য, গতবার ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জোট সংসদ দখল করে। কিন্তু এ বার কংগ্রেস ও তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের জোট হয়নি। কলেজ সূত্রে খবর, এ দিন ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা মনোনয়নপত্র তুলতে কলেজে ঢুকতেই গণ্ডগোল শুরু হয়। তারা বহিরাগত ছেলেদের নিয়ে এসেছেএই দাবি তুলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। কলেজ ক্যাম্পাসে এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরে হাতাহাতিও হয়। বহিরাগতদের কলেজে ঢোকার প্রতিবাদে টিএমসিপি-র সমর্থকরা কলেজের অফিসঘর ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখান। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করে। অভিযোগ, তখন পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় তাঁদের। এরপর পুলিশ সবাইকে কলেজ থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। তাতে কর্ণপাত না করায় বিক্ষোভকারীদের জোর করে পুলিশ কলেজ থেকে বার করে দেয় বলে অভিযোগ। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে তিন জন জখম হন। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি তিন জনেই। ঘাটালের সিআই অসিত সামন্ত বলেন, “পুলিশের উপর ছেলেরা চড়াও হলে পুলিশ সবাইকে ধরে বার করে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাতেই কেউ কেউ পড়ে যায়। তবে কোনও রক্তপাত হয়নি।” পরে পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ লাঠিচার্জও করে। কলেজের অধ্যক্ষ ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গণ্ডগোলের জেরে সাময়িক ভাবে মনোনয়নপত্র দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে এসএফআই, ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদসব পক্ষই মনোনয়নপত্র তোলে।”
আজ, শনিবার থেকে মেদিনীপুর কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন-পর্ব শুরু হবে। তার আগে সন্ত্রাস ছড়াতে টিএমসিপি-র ছেলেরা বৃহস্পতিবার রাতে এসএফআইয়ের মেদিনীপুর কলেজ ইউনিটের সম্পাদক শেখ রাহুলকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ। রাতে শহরেরই এক এলাকা থেকে অচৈতন্য অবস্থায় রাহুলকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন এসএফআইয়ের কর্মী-সমর্থকেরা। রাহুলের ঘাড়ে চোট রয়েছে। পায়েও আঘাত রয়েছে। রাতে হাসপাতালে আসেন সিপিএমের শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী। অভিযোগ উড়িয়ে টিএমসিপি’র শহর সভাপতি বুদ্ধ মণ্ডল বলেন, “এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে এমন কোনও ঘটনা যদি ঘটে থাকে এবং সেই ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে।”
এ দিন হলদিয়ার চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়ে সকাল ১১টা থেকে ২টো পর্যন্ত মনোনয়নপত্র তোলার সময় ছিল। এসএফআইয়ের অভিযোগ, সংগঠনের ১৭ জন প্রার্থী কলেজে ঢুকলেও তাঁদের মারধর করে বের করে দেন টিএমসিপি-র লোকেরা। মনোনয়নপত্র তুলতে পারেনি এসএফআই। যদিও কলেজ অধ্যক্ষ মণিশঙ্কর মাইতি বলেন, “সুষ্ঠু ভাবেই মনোনয়নপত্র বিলি হয়েছে। বাইরে পুলিশ ছিল। কোনও গোলমাল হয়নি।”
এ দিনই মহিষাদল রাজ কলেজে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এই কলেজের ৪২টি আসনেই প্রতিটিতেই এসএফআই প্রার্থী দিয়েছে। তবে এসএফআই-এর অভিযোগ, গণেশ দাস ও প্রসেনজিৎ গুমটিয়া নামে দুই সমর্থককে মারধর করেছেন টিএমসিপি-র ছেলেরা। প্রতিবাদে এ দিন কলেজ থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল করে বাম ছাত্র সংগঠন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.