ফেডারেশন কাপের ব্যর্থতা কাটিয়ে ফের জয়ের মূলস্রোতে কি ফিরতে পারবে মোহনবাগান? আই লিগ অভিযান শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে পাহাড়ের আনাচে-কানাচে এই প্রশ্নই উঁকি মারছে সন্তোষ কাশ্যপের দলে।
শনিবারের ম্যাচে কাগজে কলমে বাগানের প্রতিপক্ষ লাজং হতে পারে, কিন্তু ওডাফাদের আসল লড়াই মাঠের বাইরেই। গত দু’বছর ধরে জমে থাকা বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব ক্রমশ চাপ বাড়িয়েছে গঙ্গাপারের তাঁবুতে। ট্রফির জন্য হাপিত্যেশ, টোলগে-ওডাফার মতো তারকাকে নিয়েও ফেড কাপে মুখ থুবড়ে পড়া কিংবা দুই তারকার মনোমালিন্য নিয়ে কোচের বেফাঁস মন্তব্য। সবুজ-মেরুন আকাশে বিতর্কের কালো মেঘ কিছুতেই কাটছে না। উল্টে লাজং ম্যাচের আগে মোহন কোচের আতঙ্ক বাড়িয়েছে শিলংয়ের কনকনে ঠান্ডা এবং জওহরলাল নেহরু স্পোর্টস কমপ্লক্সে পাহাড়ি সমর্থকের ঢল। ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে সন্তোষ বলেছেন, “সব দলকেই অ্যাওয়ে ম্যাচে এ রকম পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়। এটা কোনও ফ্যাক্টর নয়।” |
লাজং দলটার প্লাস পয়েন্ট, অসম্ভব ছুটতে পারেন পাহাড়ি ফুটবলাররা। তার উপর শিলংয়ের উচ্চতাজনিত পরিস্থিতির সঙ্গেও মানিয়ে নিয়েছেন লাজং প্লেয়াররা। সেখানে তিন দিনের জন্য গিয়ে মানিয়ে নেওয়া মোহনবাগানের কাছে সত্যিই সমস্যার। সচিব অঞ্জন মিত্র নিজে দলের সঙ্গে রয়েছেন শিলংয়ে। কোচ থেকে ফুটবলার সবার উপর সংবাদমাধ্যমের কথা বলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে বাগানে। ফলে সচিবই এখন মুখপাত্র। ম্যাচের আগে টেকনিক্যাল সংক্রান্ত প্রশ্নেরও জবাব দিচ্ছেন অঞ্জনই। ফোনে বলছিলেন, “ওরা খুব ভাল দল। পুরো দলটাই সব সময় দৌড়য়। বুলপিনের মতো কোচ আছেন যে দলে, তাদের সমীহ তো করতেই হবে।” গত মরসুমে এই শিলংয়ে লাজংয়ের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে হয়েছিল মোহনবাগানকে।
বুলপিন বনাম সন্তোষ। নির্মল বনাম সুকোরে। ওডাফা বনাম লালরামলুহা। এ রকম টুকরো টুকরো বহু লড়াইয়ের আড়ালে শনিবার আসল যুদ্ধ হতে চলেছে তারুণ্য বনাম অভিজ্ঞতার। অদম্য দৌড় বনাম কৌশলের। লাজং কোচের সাফ কথা, “ছেলেরা শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য দৌড়বে।” আর দৌড় থামাতে সন্তোষের দাওয়াই কী? বিপক্ষের পেনিট্রেটিভ জোনে ওডাফা-টোলগের পায়ে বল ঠেলে দিয়ে কিস্তিমাত করা। কিন্তু সেই বলটা ঠেলবেন কে? কোভারম্যান্সের দলের দুই ফুটবলার নবি এবং জুয়েল রাজাই ভরসা। কিন্তু চোটের রক্তচক্ষু এখানেও পিছু ছাড়ছে না সন্তোষের। কুঁচকির চোট নিয়েই শিলং এসেছেন নেহরু কাপ ফাইনালের নায়ক রহিম নবি। সেই চোট এখনও সারেনি। সবুজ-মেরুন শিবির অবশ্য আশাবাদী তাঁর খেলার ব্যাপারে। শেষ পর্যন্ত যদি নবিকে না পাওয়া যায়, তা হলে স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে তৈরি রাখছেন মোহন কোচ।
মাঝমাঠ থেকেও রক্ষণের ভারসাম্য নিয়ে বেশি চিন্তায় বাগান শিবির। ফেড কাপের তিন ম্যাচে তিন গোল খাওয়া রক্ষণের ওপরই ভরসা সন্তোষের। নতুন সংযোজন বলতে শুধু লেফট ব্যাকে লালরোজামা ফানাইয়ের বদলে খেলতে পারেন বিশ্বজিৎ সাহা। গোলে অরিন্দম। যা দাঁড়াচ্ছে, ব্যর্থতা মুছতে সেই ওডাফা-টোলগের দিকেই তাকিয়ে মোহনবাগান।
|
শুরুতেই সুভাষ বনাম কোলাসো
সংবাদসংস্থা • মারগাঁও |
আইলিগ শুরুর দিনই গোয়াতে মহারণ। মুখোমুখি গতবারের চ্যাম্পিয়ন ডেম্পো আর চার্চিল ব্রাদার্স। শনিবার চার্চিলের বিরুদ্ধে ডেম্পোর দুই ফরোয়ার্ড সুয়েকা আর রোহন রিকেটস। শনিবারই অভিষেক হচ্ছে আর্সেনালের প্রাক্তন স্ট্রাইকার রোহনের। আর্মান্দো কোলাসো বললেন, “প্রথম ম্যাচের ফলাফল নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছি না। আই লিগে প্রচুর ম্যাচ খেলতে হয়।” চার্চিল অবশ্য প্রথম ম্যাচ থেকেই বেশ সিরিয়াস। নিজের দল নিয়ে সুভাষ ভৌমিক আত্মবিশ্বাসী। তবে দুই বিদেশি আক্রম আর হেনরির মধ্যে কাকে খেলাবেন তা নিয়ে দ্বিধায় তিনি। বলছেন, “আমার চারজন বিদেশিই ভাল ফর্মে। এখনও ঠিক করিনি কাকে খেলাব।” এ দিকে শনিবার আই লিগে যাত্রা শুরু করছে ভাইচুংয়ের ক্লাব ইউনাইটেড সিকিমও। প্রতিপক্ষ করিম বেঞ্চারিফার সালগাঁওকর।
|
শনিবার আই লিগে
মোহনবাগান-লাজং এফসি (শিলং, ২-৪৫),
পৈলান অ্যারোজ-মুম্বই এফসি (যুবভারতী, ২-৩০),
ইউনাইটেড সিকিম-সালগাওকর (গ্যাংটক ২-৩০),
ডেম্পো-চার্চিল ব্রাদার্স (মারগাঁও, ৫-৩০) |
|