আতঙ্কের উৎস চিনা ব্লগ
ফেডেরারকে আজই খুনের হুমকি
অক্টোবরই শেষ করে দেব রজার ফেডেরারকে!
চিনা ওয়েবসাইটে এক ব্লগারের এই হুমকির পরেই টেনিস দুনিয়া জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে গুঞ্জন গুন্টার পার্শি ফিরে আসেনি তো?
১৯৯৩-এ জার্মানির এক অর্ধোন্মাদ গুন্টার পার্শি গ্যালারি থেকে যুগোশ্লাভ টেনিস তারকা মনিকা সেলেসের পিঠে ছুরি মারে। তার আগেও দু-একবার হুমকি পেয়েছিলেন মনিকা।
রজার ফেডেরারের জীবনেও কি তেমন কিছু ঘটতে চলেছে? এই আশঙ্কাতেই অস্থির আন্তর্জাতিক টেনিস মহল। সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় সাংহাই মাস্টার্সের আয়োজকরা। শহরে পৌঁছনোমাত্র ফেডেরার ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রচণ্ড নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে বিমানবন্দরের ভিআইপি চ্যানেল দিয়ে বের করে গাড়িতে উঠিয়ে সোজা হোটেলে পৌঁছে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার এতটাই কড়াকড়ি যে, আগামী সোমবার থেকে শুরু ১০০০ এটিপি পয়েন্টের মাস্টার্স সিরিজ টুর্নামেন্ট খেলতে কখন ফেডেরার সাংহাইয়ে পৌঁছচ্ছেন, তার বিন্দুমাত্র আভাসও দেওয়া হয়নি সংবাদমাধ্যমকে। অচেনা ব্লগারের এই কাণ্ড রীতিমতো নড়িয়ে দিয়েছে টেনিস দুনিয়াকে।
পোস্টারের ফেডেরারের জন্যও পাহারা। শুক্রবার সাংহাইয়ে। ছবি: এএফপি
‘ব্লু ক্যাট পলিথেস্টিক রিলিজিয়ন ফাউন্ডার ০৭’ নামের এই ছদ্মবেশী ব্লগার কে, তা খুঁজে বের করাই এখন সাংহাই পুলিশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। চিনের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘বাইদু ডট কম’-এ এই ব্লগার লিখেছে, “টেনিসকে ধ্বংস করতে ৬ অক্টোবর রজার ফেডেরারকে খুন করব।’’ এখানেই থেমে থাকেনি সেই ব্লগার। একটি আঁকা ছবিও ‘পোস্ট’ করা হয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে, টেনিস কোর্টে মুন্ডহীন রজার হাঁটু মুড়ে বসে আছেন এবং তাঁর পিছনে ধারাল অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে কালো পোশাকের এক মুখোশধারী ব্যক্তি। আদ্যপান্ত ভদ্রলোক রজার ফেডেরারের উপর এত রাগ কেন এই ব্লগারের, এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন!
হামবুর্গে সেলেসের পিঠে ছুরি মারা হয়েছিল স্টেফি গ্রাফের ‘ভালর জন্য’, গুন্টার পার্শির জবানবন্দি ছিল এ রকমই। টেনিস সার্কিটে তখন স্টেফির সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সেলেসই। তাঁকে সরিয়ে দিয়ে স্টেফির রাস্তা পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যেই খুনের চেষ্টা করেছিল বলে দাবি জানায় গুন্টার। সেলেসের টেনিস জীবনের দু’টি বছর নষ্ট করে দিলেও অবশ্য আক্রমণকারীর কোনও শাস্তি হয়নি। কারণ, আদালতে প্রমাণ হয়, সে মানসিক ভারসাম্যহীন। ফেডেরারকে খুন করতে চায় যে লোক, তার মানসিক ভারসাম্যও ঠিক আছে কি না, সেটাও বড় প্রশ্ন।
এই হুমকি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা জানার আগেই অবশ্য বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা টেনিস প্লেয়ারের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে ফেলেছেন সাংহাই মাস্টার্স সিরিজের কর্তারা। শুধু ফেডেরারই নন, টুর্নামেন্টের সমস্ত খেলোয়াড়ের জন্যই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্যতম প্রধান কর্তা ইয়াং ইবিন। ২০০৯-এ রোলাঁ গারোয় ফাইনাল চলাকালীন এক দর্শক কোর্টে ঢুকে ফেডেরারের মাথায় গরম টুপি পরিয়ে দিয়েছিলেন। তেমন ছোটখাট ঘটনাও যাতে সাংহাইয়ে না ঘটে, সে জন্য সর্বদা তৎপর থাকা হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তরা। কিন্তু এ মৃত্যু-হুমকি পাওয়ার পরে কোর্টে নেমে কতটা স্বচ্ছন্দ থাকতে পারবেন ফেডেরার সেটাই দেখার। হুমকির আগে ফেডেরার বলেছিলেন, “সাংহাই আমার দারুণ পছন্দের শহর।” কিন্তু আজকের পরে কি সেই শহর তাঁর পছন্দের তালিকায় থাকবে?
এ বছর চারটি গ্র্যান্ড স্লামের প্রতিটিতেই আলাদা চ্যাম্পিয়ন—অস্ট্রেলীয় ওপেনে জকোভিচ, ফ্রেঞ্চ ওপেনে নাদাল, উইম্বলডনে ফেডেরার, যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে অ্যান্ডি মারে। সাংহাইয়ে চার জনই খেলছেন। এখানে চ্যাম্পিয়ন হলে জকোভিচ ১০০০ এটিপি পয়েন্ট পেয়ে বছরের শেষে শীর্ষে থাকার দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে যাবেন। সে জন্য কোনও জকোভিচ-ভক্ত ফেডেরারকে এমন হুমকি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখছে সাংহাইয়ের গোয়েন্দা বিভাগ। কোর্টের বাইরের নিরাপত্তা না হয় হল। কিন্তু খেলা চলাকালীন কোর্টে কী ভাবে ফেডেরারের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় চিনা নিরাপত্তা বিভাগ। সেলেস তো কোর্টের ধারেই ছুরি খেয়েছিলেন!

হিংসার খেলা
মনিকা সেলেসকে ছুরি
১৯৯৩ হামবুর্গ ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ চলাকালীন গ্যলারি থেকে গুন্টার পার্শি নামে এক অর্ধোন্মাদ দর্শক কোর্টে ঢুকে মনিকা সেলেসের পিঠে ছুরি মারে। দু’বছর টেনিস থেকে ছিটকে যান সেলেস।
আন্দ্রে এস্কোবার খুন
চুরানব্বই বিশ্বকাপ ফুটবলে আমেরিকার বিরুদ্ধে ম্যাচে আত্মঘাতী গোলের জন্য দেশে ফিরে প্রাণ দিতে হয় কলম্বিয়ার এই ফুটবলারকে। তার আগে অনেক বার প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় তাঁকে।
ওয়েন রুনিকে হুমকি
২০১০-এর অক্টোবরে ওয়েন রুনির ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার খবর পেয়ে ক্লাব সমর্থকরা তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাঁর বাড়ির সামনে হুমকি-পোস্টারও টাঙানো হয়েছিল।
অলিম্পিকে সন্ত্রাস
১৯৭২ মিউনিখ অলিম্পিকে প্যালেস্টাইন জঙ্গিরা ইজরায়েলের ১১জন অ্যাথলিটকে প্রথমে বন্দি করে নিয়ে যায় পরে তাদের প্রত্যেককে নির্মম ভাবে হত্যা করে। গোটা বিশ্ব এই ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে যায়।
শ্রীলঙ্কা দলের বাসে আক্রমণ
২০০৯-এ শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর চলাকালীন লাহৌরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে জঙ্গি হানার কবলে পড়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের টিম বাস।
জুলকারনাইন হায়দারকে
অপহরণের হুমকি

দু’হাজার দশে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে জুয়াড়িরা পাক ক্রিকেটারকে ফোনে অপহরণের হুমকি দিয়ে বলে ইচ্ছাকৃত খারাপ না খেললে তাঁর প্রাণসংশয় হতে পারে। ভয়ে শহর ছেড়ে পালান তিনি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.