বাস আছে। রাস্তাও মোটামুটি ভাল। কিন্তু নেই কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয়। বাসস্টপে নেই কোনও শৌচাগারও। ভুগছেন দুর্গাপুর পুরসভার ন’ডিহা থেকে কাঁকসার সিলামপুর হয়ে পানাগড় ও কসবা যাতায়াতকারী মানুষজন। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত বারবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। যদিও আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান বিপদতারণ পাত্র জানান, বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। কিন্তু ফাঁকা জায়গা না মেলায় তা বাস্তবায়িত করা যায়নি।
কসবা থেকে সিলামপুর হয়ে মূলত দুর্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করতে এই রাস্তাটি তৈরি করা হয়। রাস্তার আশপাশে অনেকগুলি গ্রাম রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদে যোগাযোগের একমাত্র উপায় এই রুটে চলা প্রায় ১০টি বাস। সারাদিন ধরেই এই রুটে বাস চলাচল করে। আয়মা, কেটেন, মোবরকগঞ্জ, ধোবাঘাটা, বাবনাবেড়া, গাংবিল প্রভৃতি গ্রামের মানুষজন দুর্গাপুর বা রনডিহা, কসবা যাওয়ার জন্য এই রুটে যাতায়াত করেন। এই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ন’ডিহা ছাড়ার পর থেকে কসবা পর্যন্ত প্রায় কুড়ি কিলোমিটার রাস্তার পাশে কোথাও কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয় নেই। ফলে সব যাত্রীকেই শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় বাসের জন্য ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। কখনও কারও দোকানে বা গাছেরতলাতেও যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু সব জায়গায় দোকান বা গাছ নেই। সেখানে চড়া রোদে গলদঘর্ম হওয়া বা বৃষ্টিতে ভেজা ছাড়া গতি নেই। যাত্রীদের তাই দাবি, পঞ্চায়েত প্রতিটি স্টপে একটি করে প্রতীক্ষালয় গড়ে দিলে সুবিধা হয়। তাঁদের আরও দাবি, এই সব বাসস্টপের আশপাশে কোনও শৌচাগারও নেই। কাজেই একটি প্রতীক্ষালয় ও শৌচাগারের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। |
ধোবাঘাটা স্টপে বাসের জন্য অপেক্ষারত নীলু বাউড়ি, সুকুমার বাগদি, অভিজিৎ বাগদিরা বলেন, “এই সময়ে যখন তখন বৃষ্টি নেমে যাচ্ছে। দাঁড়ানোর জায়গা নেই। কোনও রকমে গাছেরতলায় দাঁড়িয়ে আছি। জোরে বৃষ্টি নামলে ভেজা ছাড়া পথ নেই।” ওই গ্রামের বাসিন্দা শক্তিনাথ সিংহের কথায়, “কোনও শৌচাগার না থাকায় মহিলাদের বিপাকে পড়তে হয়।” বাবনাবেড়ায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েক জন যাত্রী বাসের জন্য গাছেরতলায় অপেক্ষা করছেন। তাঁদের দাবি, “আমরা অনেক বার পঞ্চায়েতের কাছে প্রতীক্ষালয় চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।” এই রুটের অনেকটা এলাকাই আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের অধীন। প্রধান বিপদতারণ পাত্র জানান, পঞ্চায়েতের বৈঠকে যাত্রী প্রতীক্ষালয় ও শৌচাগার নির্মাণের জন্য প্রস্তাব গৃহীত হয়। কিন্তু প্রতীক্ষালয় বা শৌচাগার গড়ার জন্য কোনও ফাঁকা জায়গা না মেলায় তা আর গড়ে ওঠেনি। তাঁর বক্তব্য, “প্রতীক্ষালয় ও শৌচাগার গড়ার জন্য বাসিন্দারা জমি দিলে আমরা তা তৈরি করে দেব। পাশাপাশি, প্রতিটি বাসস্টপে পানীয় জলের কল বসানোর কথাও ভাবা হয়েছে।” ভাবনা কবে বাস্তবে রূপ পাবে, তা অবশ্য জানা নেই। |