শাস্তি হোক, চাইছেন সূর্যও
পিজিতে বাম জমানায় নয়ছয়
৫০ কোটি, বলছে বিশেষ অডিট
গের বাম সরকার অডিট করে এসএসকেএম হাসপাতাল তথা ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমইআর)-এ দুর্নীতির হদিস পেয়েছিল। বাম জমানায় সেখানে যে বড়সড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছিল, সেটা ধরা পড়ল নতুন সরকারের অর্থ দফতরের বিশেষ অডিটেও।
২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানে ৫০ কোটিরও বেশি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অর্থ দফতর সূত্রের খবর। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, “আগের সরকার যে এই চুরির কথা জানত না, তা নয়। ওই আমলে চুরি-জালিয়াতি ধরা পড়লেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই ফের বিশেষ অডিট করানো হয়েছে।”
অর্থ দফতরের বিশেষ অডিট রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘সরকারের অর্থ নিয়ে আইপিজিএমআর-এর অফিসারেরা জালিয়াতি করেছেন।’ তদন্তে জিনিসপত্র কেনার ভুয়ো অর্ডার, অস্তিত্বহীন জিনিসপত্রের তালিকা নথিবদ্ধ করা, গুদাম পরীক্ষার ভুয়ো সার্টিফিকেট পেশ এবং জালিয়াতি করে তথ্য বাদ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া যে-সব জিনিসপত্র কখনও কেনাই হয়নি, সেগুলির দাম হিসেবে প্রচুর টাকা দেওয়ারও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে অডিটে। সেই সঙ্গেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিসেবের বহু নথি পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীদের অনুমান, উধাও হয়ে যাওয়া নথিপত্রে আরও প্রায় ২৬ কোটি টাকার হদিস পাওয়া যেত।
২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে সিএজি এবং আগের বাম সরকার দু’বার অডিট করে মোট ৫৪.৪২ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির হদিস পেয়েছিল। কিন্তু কেউ ধরা পড়েনি। ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি তদন্ত করে চুরির প্রমাণ পায়। সব শেষে বর্তমান সরকার আরও এক বার বিশেষ অডিট করানোর পরে ৫০.৪৪ কোটি টাকারও। বেশি জালিয়াতি ধরা পড়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে?
আইপিজিএমআর-এর বর্তমান অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র জানান, তিনি ২০০৮ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। তিনি বলেন, “১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যেই সব চেয়ে বেশি জালিয়াতি হয়। সিএজি-র অডিটে তার অনেকটাই প্রমাণিত হয়েছে। দফতরের অভ্যন্তরীণ তদন্ত, রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনের তদন্ত ইত্যাদির রিপোর্টও জমা পড়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” তবে ভুয়ো জিনিসপত্র কেনার বিল দেখিয়ে প্রায় ছ’কোটি টাকা আদায়ের চেষ্টা তিনি আটকে দিতে পেরেছেন বলে বর্তমান অধিকর্তার দাবি।
প্রদীপবাবু আরও জানান, এই প্রতিষ্ঠানের এক জন স্টোরকিপার যাদবপুরে যক্ষ্মা হাসপাতালে বদলি হন। সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হয় এবং তিনি জেলে যান। তৎকালীন অধিকর্তার মৃত্যু হয়েছে। ফলে উধাও হয়ে যাওয়া সরকারি টাকা উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “সরকারি অর্থ নয়ছয়ের দায়িত্ব আগের সরকারের কাউকে না-কাউকে নিতেই হবে।” আগেকার অর্থাৎ বাম জমানার কে ওই দায়িত্ব নেবেন? প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “সিএজি-র অডিটে চুরি ধরা পড়েছে দেখে আমরাই বিষয়টি ভিজিল্যান্স কমিশনে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তাদের রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা চাই, বর্তমান সরকার দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক, চুরি বন্ধ করুক। এই নিয়ে আমাদের কোনও রাখঢাক নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.