ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিস্থিতি যে বাস মালিকদের পক্ষে মোটেই অনুকূল নয়, সে কথা স্বীকার করে নিয়েও ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে নিজের অসহায়তার কথাই জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। তাঁর কথায়, “বাস-মালিকেরাও ‘ভুল’ কিছু বলছেন না। সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে আমি কী করব?” পরিস্থিতির চাপে রাস্তায় যে দিন দিন বাসের সংখ্যা কমছে এবং তার জেরে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ছেন, সে সম্পর্কেও তিনি অবহিত বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শনিবার, ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বাস মালিকদের সংগঠন ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট’-এর সঙ্গে আলোচনার পরে মদনবাবু জানান, এই পরিস্থিতির আশু সমাধান তাঁর জানা নেই। এখনই বাসভাড়া বাড়ানোর অনুমতি দিচ্ছে না সরকার।
তা হলে বাস মালিক এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের অসুবিধার কথা ভেবে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? মন্ত্রী বলেন, “বাসভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আমার একার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।” এ দিকে শনিবারই ট্যাক্সি ও মিনিবাস মালিকদের প্রধান সংগঠনগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসে ‘বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট’। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ৮ অক্টোবরের মধ্যে ভাড়া না বাড়ানো হলে রাস্তা থেকে বাস-মিনিবাস-ট্যাক্সি তুলে নেওয়া হবে। বৈঠকে ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট’ ছিল না। ‘বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট’-এর দীপক সরকার বলেন, “জয়েন্ট কাউন্সিলকে ডেকেছিলাম। ওরা আসেনি?” অর্থাৎ, ভাড়া বাড়ানোর প্রশ্নে বাস মালিকদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট।
এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জয়েন্ট কাউন্সিল-এর সাধন দাস বাস ভাড়া বাড়ানোর আর্জি জানান। কিন্তু মন্ত্রী তাঁদেরও বলেন, “ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই আমার।”
বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, “গত তিন বছরে ডিজেলের দাম ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৫০ টাকাও ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ সবই কংগ্রেসের অত্যাচার ও জুলুমের ফল।”
সাধনবাবু বলেন, “ইতিমধ্যেই ৫০ শতাংশ বাস বসে গিয়েছে। ধর্মঘটের আর প্রয়োজনই হবে না। ভাড়া না বাড়লে কয়েক দিনের মধ্যে আর্থিক কারণেই সব বাস বসে যাবে।” ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর নেতা বিমল গুহ এ দিন বলেন, “ভাড়া বাড়ানো হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য রাজ্য সরকার বিভিন্ন সংগঠনকে বিভিন্ন সময়সীমা দিচ্ছে। আমরা এ বার ঠিক করেছি, এককাট্টা হয়ে লড়ব। ৮ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে।” |