ফেডারেশন কাপ জিতে উঠে আজ আমার আর টিমের জন্য কী খাবার অর্ডার করব সেটা এখনই ঠিক করে ফেলেছি।
ডিনারের মেনুটা শুনবেন? ভাত আর গোয়ান ফিশ কারি!
বুঝতে পারছেন তো, ইস্টবেঙ্গল শিবিরের মেজাজটা এখন কেমন? আর ভারতীয় খেলাধুলোর ভক্তদের জন্য তো আজ সুপার সানডে! শিলিগুড়িতে আমরা নামছি ডেম্পোর বিরুদ্ধে, আর কলম্বোয় ভারত-পাক যুদ্ধ। শনিবারও দেখলাম আমার ছেলেরা ওই ম্যাচটা নিয়ে খুব উত্তেজিত ভাবে আলোচনা করছে। ভারত-পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলে কথা! ইংল্যান্ডে বড় হয়েছি বটে, তবু বলছি এই লড়াইটা আমাদের অ্যাসেজের চেয়েও বড়। শুক্রবার যেমন হল, সে রকম অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধোনিরা হারলে ভারতীয় সমর্থকরা তা-ও সেটা মেনে নিতে পারে। কিন্তু পাকিস্তানের কাছে হারলে তারা টিমকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারে না। মোহনবাগান ম্যাচ নিয়ে ইস্টবেঙ্গল ভক্তদের আবেগটাও ঠিক এ রকম। অন্য যে কোনও দলের কাছে হার মেনে নিলেও মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হার? কখনওই না!
|
চাণক্য শ্লোক |
এখন অবশ্য মোহনবাগান নিয়ে ভাবতে চাই না। আমাদের পুরো ফোকাস এখন ডেম্পোর ওপর। ওরা শক্তিশালী দল। গত কয়েক বছর একই কোচ ওরা ধরে রেখেছে আর ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছে। কিন্তু ওদের মোকাবিলা করার মতো বারুদ আমার টিমের আছে। আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। চার্চিল ব্রাদার্স ম্যাচে যে রকম খেলেছিলাম, সে রকম খেলতে পারলে আমাদের হারানো খুব, খুব কঠিন।
জানি ছেলেদের ওপর ফাইনাল খেলার চাপ থাকবে। কিন্তু সেই চাপটা আমরা নিতে চাই না। আমরা মাঠে গিয়ে এমন ফুটবল খেলতে চাই যেটা ছেলেরা উপভোগ করবে। আর হ্যাঁ, আমরা কাপ হাতেই ফিরতে চাই। এ রকম সহজ ভাবেই ব্যাপারটা নিচ্ছি। ছেলেদের রিল্যাক্সড রাখতে খুব হালকা ট্রেনিং করিয়েছিছোটখাটো পুল সেশন, সবাই মিলে দিনটা উপভোগ করা, এই সব। ছেলেদের বলেছি, আজ মাঠে যাওয়ার আগে দুপুরে ঘণ্টাদুয়েক ভাল করে ঘুমিয়ে নিতে। তাতে ওদের মন ঝরঝরে হয়ে যাবে। টেনশন করার সময়ও পাবে না।
ফাইনালে ওপারা আর গুরবিন্দরকে পাব নাসেমিফাইনালের পর থেকেই এটা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। চার্চিল ম্যাচে ওরা দু’জনেই অসাধারণ খেলেছে। ফাইনালে ওদের না পাওয়াটা বড় ক্ষতি। কিন্তু এটা পেশাদার ফুটবলের একটা অংশ। এটা মেনে নিতেই হবে। আমি জানি রাজু আর অর্ণব ওদের অভাব পুষিয়ে দেবে। আর আমি দু’জনকেই বলেছি কালীঘাট ম্যাচে কী হয়েছিল সে সব ভুলে যাও। কাল একটা নতুন দিন। পেশাদার জগতে সব স্পোর্টসম্যানেরই কোনও না কোনও দিন খারাপ যায়। কিন্তু খেলার মাঠ এমনই জায়গা যেখানে যে দিন তুমি বিরাট জিরো, তার পরের দিনই সবচেয়ে বড় হিরো হয়ে যেতে পারো। রাজু-অর্ণবকে ঠিক এটাই বলেছি।
আজ দর্শক ফ্যাক্টরটাও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। শিলিগুড়ির মানুষ আমার টিমকে দারুণ ভাবে সমর্থন করছেন। তাঁদের কাছে আমার আবেদন, ফাইনালেও আপনাদের সমর্থন চাই। যে কোনও ফাইনালে দর্শক সমর্থন খুব বড় তফাত গড়ে দেয়। বিশেষ করে যখন আপনার টিম ম্যাচে কিছুটা চাপে থাকে। আশা করছি মাঠে প্রচুর দর্শক আসবেন। তাঁরা ম্যাচটা উপভোগ করবেন আর আমাদের জন্য গলা ফাটাবেন।
লাল-হলুদ সমর্থকদের মতো আমি আর আমার টিমও ফাইনালে জিতে মাঠ ছাড়তে চাই। তার পর আশা করি হোটেলে ফিরে দেখব ভারতও পাকিস্তানকে হারাচ্ছে। আর সব শেষে ডিনারে গোয়ান ফিশ কারি তো থাকছেই! |