সুপার সানডে! এ ছাড়া আর কী বলার থাকতে পারে? একে তো ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ, তার ওপর এমন একটা ম্যাচ যেখানে ভারত হারলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে এক রকম বিদায় নেবে। রবিবার মনে হয় দু’দেশের মানুষ টিভি-র সামনে থেকে উঠতে পারবেন না। কলম্বোতেও প্রচুর ভারত-পাকিস্তানি দর্শক এসে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে একটা ধমাকা ম্যাচের যাবতীয় মশলা রয়েছে বিশ্বকাপের এই মহাম্যাচে।
দু’টো দলই সুপার এইটে একটা করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। দুটো দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় তফাতটা হল, বোলিং। ভারতের ব্যাটিং পাকিস্তানের থেকে ভাল হতে পারে, কিন্তু বোলিংয়ে মহম্মদ হাফিজের দল অনেকটাই এগিয়ে। পাকিস্তান টিমের ব্যালান্সও খারাপ না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচে সেটা ভালই বোঝা গিয়েছে। একটা সময় তো ম্যাচ থেকে ছিটকেই গিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু দুই উমর হারা ম্যাচ জিতিয়ে দেয়। উমর গুলের ব্যাটিং দেখে আমি কিন্তু মোটেও অবাক নই। ও রোগাসোগা চেহারার হলে কী হবে, মারে বেশ জোর আছে। টি-টোয়েন্টিতে ওকে আমি আগেও এ রকম মারতে দেখেছি।
একটা কথা মনে রাখবেন, পাকিস্তান টিমটা কিন্তু টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ভয়ঙ্কর। বিশ্বের অন্য যে কোনও টিমের থেকে ওরা বেশি ম্যাচ জিতেছে। আগের তিনটে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেই উঠেছে পাকিস্তান। ওদের এই ধারাবাহিকতায় আমি এতটুকু অবাক নই। পাকিস্তানে যথেষ্ট প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। বিশ্বমানের স্পিনার আছে, আগেই লিখেছি, ব্যাটিং-বোলিংয়ের ব্যালান্সটাও খুব ভাল।
এ হেন দলের বিরুদ্ধে নামার আগে ধোনিকে কিন্তু কতগুলো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বার করতে হবে। এক, পাঁচ বোলার নিয়ে কি নামব? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে হল: হ্যাঁ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও পাঁচ বোলার নিয়ে নামতে হবে। এর পর আসছে ওপেনিংয়ের প্রশ্ন। ভারতের কিন্তু শুরুর দিকে ভাল ব্যাটসম্যান পাঠাতে হবে। ইরফান পাঠানকে কোনও রকম ছোট করছি না, কিন্তু আমার মনে হয় ওপেনিংয়ের থেকে ও সাত নম্বরে বেশি ফিট করবে। ওর টেকনিকটা সাত নম্বরে নেমে রান তোলার পক্ষে ঠিক আছে, কিন্তু নতুন বল সামলে বড় রান করার জন্য উপযুক্ত নয়। তাই মনে হয় সহবাগকে আবার ওপেনিংয়ে দেখতে পাব। আর সেটা যদি না হয়, তা হলে গম্ভীরের সঙ্গে বিরাট কোহলিকে দিয়ে ওপেন করানো যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের একটা কঠিন ম্যাচ গেল। এই ম্যাচটা ভুলে গিয়েই রবিবার মাঠে নামতে হবে ধোনিদের। আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, একটা দিন খারাপ খেললেই একটা টিম বাজে হয়ে যায় না। ভারতের ক্ষমতা আছে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার। আরও একটা ব্যাপারে কিন্তু পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকবে ভারত। তা হল, সাম্প্রতিক অতীতে ভারতকে কিন্তু তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে অনেক ভাল দেখিয়েছে। যখনই চাপের ম্যাচ এসেছে, পাকিস্তানের চেয়ে সব সময় ভাল খেলেছে ধোনিরা। দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালই বলুন, বা গত বছরে মোহালিতে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল সবেতেই কিন্তু বাজি মেরেছে ভারত।
প্লাস আরও একটা তথ্য। বিশ্বকাপে ভারতকে কখনও হারাতে পারেনি পাকিস্তান। সব মিলিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার মতো রসদ আছে ধোনির কাছে।
কিন্তু প্রশ্ন এখন একটাই আবার কি সেই কাজটা করে দেখাতে পারবে ধোনিরা?
|
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারতের হাতে লাঞ্ছনা সুপার এইটে কাটিয়ে উঠল ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে। অন্য ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেমিফাইনালের দিকে অনেকটা এগিয়ে গেল। শনিবার ২০ ওভারে নিউজিল্যান্ড তোলে ১৪৮-৬। ইংরেজ পেসার স্টিভ ফিন ১৬ রানে ৩ উইকেট নেন। রান তাড়া করতে নেমে লিউক রাইটের (৪৩ বলে ৭৬) দাপটে সাত বল বাকি থাকতে জিতল গত বারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড (১৮.৫ ওভারে ১৪৯-৪)। অন্য ম্যাচে গেইল (২) ব্যর্থ হতেই মুখ থুবড়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং। স্যামুয়েলসের ৫০ রানের সৌজন্যে কোনও ক্রমে ১২৯-৫ স্কোরে পৌঁছয়। মেন্ডিস ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে জয়বর্ধনে (৬৫ নঃআঃ) ও সঙ্গকারা (৩৯ নঃআঃ) ১৫.২ ওভারেই জিতিয়ে দেন দলকে। |