|
|
|
|
এবিজি-শুভেন্দু গরহাজির, বন্দর-বৈঠক নিষ্ফলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও কলকাতা |
শ্রমিক-অসন্তোষের জেরে হলদিয়া বন্দরের অচলাবস্থা কাটাতে বৃহস্পতিবার যে বৈঠক হবে, আগেই তা জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বিবদমান দু’পক্ষ গরহাজির! তার মধ্যেই এ দিন হলদিয়ায় বৈঠক করলেন কলকাতা বন্দরের বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশ জৈন। এবং ফল যা হওয়ার, তা-ই হল। বিবদমান দু’পক্ষ এবিজি এবং তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, কেউই না-থাকায় কোনও সমাধানসূত্র বেরোল না।
হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে কাজ হয়নি এ দিনও। আজ, শুক্রবারেও হবে না। কারণ, এবিজি তাদের কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেনি। জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলনের জন্য মঙ্গলবারেই কাজ বন্ধ করে দেয় তারা। শুভেন্দুবাবুও জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলন স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেননি। পণ্য খালাসকারী সংস্থা ও শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে চেয়ারম্যানের ডাকা এ দিনের বৈঠকে দু’পক্ষই নিজেদের বক্তব্য জানাবেন বলে আশা করেছিলেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দু’পক্ষের কোনও প্রতিনিধিই ওই বৈঠকে না-থাকায় মুশকিল আসানের হদিস মেলেনি।
তা হলে বৈঠক করে লাভ কী হল? বন্দরের চেয়ারম্যান বলেন, যাঁরা বন্দর ব্যবহার করছেন, সেই সব ক্লিয়ারিং ও হ্যান্ডলিং এজেন্টদের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। প্রায় ৯০ শতাংশই এসেছিলেন। আমি তাঁদের সমস্যার কথা শুনেছি।”
হলদিয়া বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম কবে শুরু হবে? |
|
হলদিয়া বন্দরের ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের অবস্থান। —নিজস্ব চিত্র |
মণীশবাবু বলেন, “শুক্রবার (আজ) বন্দরের অছি পরিষদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সেখানে পুরো বিষয়টি জানাব। প্রয়োজনে বন্দর সচল করতে আমরা আইনমাফিক সিদ্ধান্ত নেব।”
অশান্তির মধ্যেই এবিজি ২৭৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। তার জেরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। এ দিন দুপুরে হলদিয়া বন্দরের অতিথিশালায় চেয়ারম্যানের বৈঠক চলাকালীন এবিজি-র ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা থালা-বাটি হাতে বিক্ষোভ দেখান। ছাঁটাই হননি, এমন বেশ কিছু শ্রমিকও বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। তবে ওই বিক্ষোভ থেকে কোনও রকম স্লোগান দেওয়া হয়নি। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের সমস্যাটি নিয়ে সে-ভাবে আলোচনাও হয়নি বৈঠকে।
বৈঠকের পরে বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশবাবু বলেন, “পণ্য খালাসকারী সব সংস্থাকে ডাকা হলেও এবিজি-র কেউ আসেননি। আসতে পারেননি সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বেলপাহাড়িতে গিয়েছেন। তবে আমাকে বৈঠকের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন।”
কেন এ দিনের বৈঠকে গেল না এবিজি? ওই সংস্থার সিইও গুরপ্রীত মালহি বলেন, “হলদিয়ায় পা না-দেওয়ার জন্য বারবার আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সেটা আমরা লিখিত ভাবে বন্দর-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, এই অবস্থায় আমাদের পক্ষে হলদিয়ায় যাওয়া সম্ভব নয়।” কে বা কারা তাঁদের হুমকি দিচ্ছে, তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি এবিজি-র সিইও।
শুভেন্দুবাবু বৈঠকে গেলেন না কেন? বৈঠকে নিজের অনুপস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই তৃণমূল সাংসদ।
শ্রমিক-আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে বুধবারেই হলদিয়া বন্দরের অন্যতম আধিকারিক রমাকান্ত বর্মনকে কলকাতা বন্দরে অন্য বিভাগে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। এ দিন সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ‘বিষয়টি বন্দরের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত’ বলে এড়িয়ে যান মণীশবাবু। শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটাও এবিজি-র অভ্যন্তরীণ বিষয়।” |
|
|
|
|
|