নাবালক দুই পুত্র, বৃদ্ধা মা এবং স্বামী—পরিবারের সকলের ‘নিরাপত্তা’ বাবদ ৫০ হাজার টাকা মূল্য বেঁধে দিয়েছেন কংগ্রেসের এক কাউন্সিলর!
কল্যাণীর ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা শাশ্বতী দত্ত রায় নামে এক মহিলার বাড়িতে চড়াও হয়ে স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সোমনাথ বেহারা শাসিয়ে গিয়েছিলেন, ‘কথা বাড়াবেন না। আপনার বৃদ্ধা মা, স্বামী-পুত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে দেবেন। কল্যাণীর মহুকুমা পুলিশ অফিসার চন্দ্রশেখর বর্ধনের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন শাশ্বতীদেবী। তিনি বলেন, “পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় গত দু-দিন ধরে টেলিফোনে ক্রমাগত প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।”
কল্যাণীর বি-৭/২৯২-এর বাসিন্দা ওই মহিলা বাড়ির লাগোয়া এক ফালি জমিতে বাহারি গাছ লাগিয়েছিলেন। শাশ্বতীদেবী বলেন, “গাছ ভালবাসি, তাই বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে লাগিয়েছিলাম। কিন্তু অবাক হলাম, পুজো কমিটির পক্ষ থেকে নির্দেশ এল, গাছ উপড়ে ফেলতে হবে।” রাজি হননি তিনি। পাশে পেয়েছেন কল্যাণী পুরসভাকেও। পুর চেয়ারম্যান প্রদীপ শূর বলেন, “সবুজায়ন আমাদের লক্ষ্য। গাছ উপড়ে ফেলার হুমকি দেওয়া অনুচিত। রাস্তা দখল করে পুজোও আইন বিরুদ্ধ। পুরসভা ওই পুজোর অনুমতি দেবে না।”
রাস্তার অর্ধেক জুড়ে পুজোর প্যান্ডেল। শাশ্বতীদেবীর বাড়ির প্রবেশ-পথ গত বারের মতো এ বারও প্রায় বন্ধ। পাড়ার পুজো বলে তাঁরা আপত্তি করেননি। কিন্তু বছরভর যত্ন করে আসা গাছগুলি উপরে ফেলতে বলায় প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। আর তাতেই কংগ্রেসের কাউন্সিলর সোমনাথবাবুর ওই ফতোয়া। ওই মহিলার কথায়, “এক দুপুরে বাড়িতে চড়াও হয়ে ঠান্ডা গলায় শাসিয়ে গিয়েছিলেন সোমনাথবাবু, পঞ্চাশ হাজার টাকা না দিলে আমার দুই সন্তান, স্বামী ও বৃদ্ধা মায়ের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী এ কথা যাতে পাঁচকান না হয় সে ব্যাপারেও সতর্ক করেছিলেন তিনি।” ওই ঘটনার পর থেকে শাশ্বতীদেবীর বাড়িতে কাজের লোক কিংবা সাফাই কর্মীরাও নিয়মিত আসছেন না বলে মহিলার অভিযোগ।
সোমনাথবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “পুজোর প্যান্ডেল বাঁধতে গেলে গাছ তো কাটতেই হবে। তবে টাকা চাওয়ার গল্প ফেঁদে আমার নামে কুৎসা রটানো হচ্ছে।” কল্যাণীর এসডিপিও চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “মহিলার অভিযোগ পেয়েই কল্যাণী থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।” |