উগ্র হিন্দুত্ব এখন অতীত। ইউপিএ সরকারের দুর্নীতি, জনবিরোধী নীতি, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির মতো বিষয়গুলি নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। তবে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকের প্রথম দিন বুঝিয়ে দিল, খুচরো
ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে মতভেদ আছে দলেই।
ক্ষমতায় এলে বিজেপি খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। দলের একাংশের বক্তব্য, বিজেপি সংস্কারমুখী দল। এনডিএ জমানায় বহু সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাই ক্ষমতায় এলে বিদেশি লগ্নি বাতিল করা যাবে না। তাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। বিজেপি নেতৃত্ব চান, কংগ্রেসই এই সিদ্ধান্ত বাতিল করুক। তাহলে আর তাঁদের গায়ে আঁচ পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না। |
কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলতে আজ ২০০২ সালে লেখা মনমোহন সিংহের একটি চিঠি প্রকাশ করেছে। তখন রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন মনমোহন সিংহ। এনডিএ সরকার খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি আনলে কংগ্রেস বিরোধিতা করবে বলে ওই চিঠিতে ব্যবসায়ী সংগঠনকে আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে সরব হবে বিজেপি। তবে ক্ষমতায় এলে বিজেপি বিদেশি লগ্নি নিয়ে কী অবস্থান নেবে সে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন নিতিন গডকড়ী থেকে অরুণ জেটলি, সকলেই।
খুচরোয় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করলেও তাঁরা যে সংস্কারের বিরোধী নন তাও স্পষ্ট করে দিতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। সভাপতি নিতিন গডকড়ীর কথায়, “খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করার অর্থ এই নয় আমরা সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা সেই ধরনের সংস্কার চাই যাতে সাধারণ মানুষের উপকার হয়।” অরুণ জেটলির দাবি, বিদেশি লগ্নি নিয়ে কেন্দ্র ভুল তথ্য দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী কোনও সংস্থা এ দেশে এলে তাদের সব রাজ্যে খুচরো বিক্রয় কেন্দ্র খোলার অধিকার থাকবে। সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার চাইলেও নিষেধ করতে পারবে না।
তবে বিদেশি লগ্নির চেয়েও দুর্নীতি, মুদ্রাস্ফীতির মতো বিষয়গুলিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। বফর্স কেলেঙ্কারির সময়ে রাজীব গাঁধী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের টাকা বাইরে পাঠানোর অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা।
এখনও সেই কৌশলই নিতে চায় বিজেপি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই বলেছেন, “কেন্দ্র এখন বিদেশি শক্তির কথায় চলছে।” |