বিনোদন নতুন মালিকের খোঁজে হন্যে হার্বি-গাড়ি
লবার্ট আইনস্টাইন কি ভুল বলেছিলেন? এই ব্রহ্মাণ্ডে সর্বোচ্চ গতি সম্পর্কে তাঁর ধারণা কি মিথ্যে? নিউট্রিনো, বিচিত্র চরিত্রের জন্য যাঁদের আর এক নাম ‘ভুতুড়ে কণা’, তাদের কাছে কি হেরে যাবেন পদার্থবিজ্ঞানের সম্রাট?
বিখ্যাত ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী এনাক্কাল চণ্ডী জর্জ (ই সি জি) সুদর্শন বহু কাল ধরে বলে আসছেন আলোর চেয়ে দ্রুততর কণার অস্তিত্বের কথা। কিন্তু তা এত কাল তাত্ত্বিক সম্ভাবনা হিসেবেই গণ্য হয়ে এসেছে। এ বার কি আইনস্টাইন ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়ে সমাদর পাবেন সুদর্শন?
যদি তাই হয়, তা হলে অন্তত তত্ত্বে হলেও সম্ভব হবে অতীতে পৌঁছে যাওয়া। টাইম ট্রাভেল ইনটু দ্য পাস্ট। নিজের শৈশবে ফেরত যাওয়ার মতো টাইম মেশিন এক্ষুনি না-ই বা তৈরি করা গেল, তাতে কী-ই বা যায়-আসে? তেমন সম্ভাবনার দরজা যদি খোলে, তাতেই বা মন্দ কী?
প্রশ্ন এবং সম্ভাবনাগুলো নিয়ে তোলপাড় পদার্থবিদ্যার জগৎ। টুইটার, ফেসবুক, ব্লগ মন্তব্যে ছয়লাপ।
সব কিছুর মূলে এক পরীক্ষার ফলাফল। যা ঘোষিত হল শুক্রবার দুপুরে।
এ রকমই এক ফোকসভাগেন বিটল গাড়ি ‘হার্বি’।
এ পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেছে সে। বয়সও নেহাত কম হল না। জরার চিহ্ন অবশ্য নেই শরীরে। দু’টো ‘চোখই’ বেশ সচল। খুব সহজেই ডান দিক-বাঁ দিকে ‘ঘাড়’ ঘোরাতে পারে। এমনকী চাইলে হয়তো ‘রেসে’ দৌড়তেও পারবে। কিন্তু মুশকিল একটাই। তাকে নিজের জিম্মায় রাখতে রাজি হচ্ছেন না কেউই।
‘হার্বি-সিরিজ’ খ্যাত সাতটি ‘ফোকসভাগেন বিটল’ গাড়ির কথা হচ্ছে। মোট সাতটি গাড়ি ছিল। তারই একটিকে কেনার মতো লোক পাওয়া যাচ্ছে না। আপাতত তাকে থাকতে হচ্ছে অস্ট্রেলীয় মালিকের গ্যারাজেই।
এমন উপেক্ষা যে অপেক্ষা করবে, তা নিশ্চয়ই ‘ভাবেনি’ হার্বি। ষাটের দশকে মুক্তি পাওয়া প্রথম ছবি ‘দ্য লাভ বাগ’-এর সময় থেকেই সে এবং তার মালিক জিম ডগলাসের রসায়নে মজেছে দর্শককুল। এই জিমের সঙ্গেই একের পর এক ‘রেসে’ অংশ নিয়েছে হার্বি। এবং বারবারই বাকিদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সেরার শিরোপা নিজের মালিকের হাতেই তুলে দিয়েছে সে। শুধু প্রথম ছবিই নয়, হার্বি-সিরিজের বাকি ছবিগুলোও ‘হার্বি রাইডস এগেইন’ (১৯৭৪) ‘হার্বি গোজ টু মন্টি কার্লো’ (১৯৭৭), ‘হার্বি গোজ বেনানাস’ (১৯৮০) বা ২০০৫-এ মুক্তি পাওয়া ‘হার্বি: ফুল্লি লোডেড’, সব ছবিতেই হার্বিকে সেই একই মেজাজে দেখা গিয়েছে। মাঝখানে বেশ ক’বার তার মালিকানা বদল হয়েছে বটে। কিন্তু তাতে কী? হার্বি তো হার্বিই। আর তাই গাড়ি হয়েও মালিকের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নে সে আক্ষরিক অর্থেই ‘অদ্বিতীয়’।
কিন্তু এ হেন হার্বির জন্যই এখন মালিক খুঁজে পাওয়া ভার। তা বলে চেষ্টার অবশ্য কোনও খামতি রাখছেন না হার্বির বতর্মান মালিক অ্যালেক্স মিকাকোভস্কি। ২০০৮ সালে উত্তর আমেরিকার মিসৌরির এক সংগ্রাহকের কাছ থেকে হার্বি-সিরিজের ছবিতে ব্যবহৃত সাতটি ফোকসভাগেন বিটলের একটিকে কিনেছিলেন তিনি। তখন অবশ্য বেশ শোচনীয় অবস্থায় ছিল গাড়িটি। আমেরিকায় প্রায় দু’বছর ধরে ‘চিকিৎসা’ করিয়ে তার আসল চেহারা ফিরিয়ে এনেছিলেন অ্যালেক্স। তার পর ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় নিজের কাছে হার্বিকে নিয়ে আসেন।
নতুন মালিকের সঙ্গে বেশ ভালই ছিল হার্বি। কিন্তু গোল বাধল ২০১২ সালের জানুয়ারি মাস নাগাদ। অ্যালেক্স জানিয়েছেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতেই হার্বিকে বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ন’মাস কেটে গেলেও এই ‘চলচ্চিত্র-তারকাকে’ কেনার মতো খরিদ্দার জুটছে না। কেউ কেউ বলছেন, হার্বির জন্য প্রায় দেড় লক্ষ অস্ট্রেলীয় ডলার দাম হাঁকাতেই খরিদ্দারের এই আকাল। তাঁদের দাবি, যাই হোক না কেন, আদতে তো পুরনো গাড়ি। এত দাম দিয়ে কেউ কিনতে যাবেন কেন?
অ্যালেক্সের অবশ্য যুক্তি আলাদা। তাঁর দাবি, “হার্বির জন্য এত টাকা খরচ করার লোক কমই রয়েছেন। তবে যাঁরা গাড়ি-সংগ্রাহক, তাঁরা বিষয়টার মর্ম বুঝবেন।” অ্যালেক্সের বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট লেখা, “এই সেই গাড়ি যাকে ‘হার্বি গোজ টু মন্টি কার্লো’ ও ‘হার্বি গোজ বেনানাস’-এ ব্যবহার করা হয়েছিল।” কিন্তু পর্দার ইউএসপি কিছুতেই নতুন মালিক খুঁজে দিতে পারছে না হার্বিকে। যদিও এই রুপোলি পর্দাতেই কিন্তু সে তার প্রথম মালিককে খুঁজে পেয়েছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.