ঠান্ডা লড়াই
মৃণালকান্তি দাশ |
|
গরম-ঠান্ডা, কার হবে জিত?
ঠান্ডা লড়াই বাধিয়েছে শীত।
নলেন গুড়ের মোয়া ও পাটালি
দুয়ো দিয়ে তাকে কোথায় পাঠালি?
পিঠে, মালপোয়া, পায়েসের হাঁড়ি
গুটিয়েছে তারা কবে পাততাড়ি! উঠোনে পড়েছে সোনা রোদ্দুর।
হাতছানি দেয় দিঘা, বোলপুর।
আধ ফোটা ভাত, নুন-তরকারি,
সে চড়ুইভাতি ভুলে যেতে পারি? |
|
|
কপি, শালগম, পালং, পিড়িং
একা একা কাঁদে হাট্টিমাটিম।
ঝলমলে তাঁবু, জাদু-সার্কাস,
শীত ফুরোলেই ফাঁকা চার পাশ।
দল বেঁধে গেলে চিড়িয়াখানায়
বুড়ো বাঘ এসে নালিশ জানায়। রূপকথা নেই, আছে টিনটিন।
ভূতের গপ্পো? সেও তো রঙিন।
সামনে আকাশ, পা চালিয়ে চল
শীত ঢেকে দিক লেপ-কম্বল। |
|
|
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
ঝমঝম্ রাতে
গোপাল কুম্ভকার |
|
রকেট গাড়ি
স্বপনকুমার বিজলী |
|
|
|
টম্টম্ চেপে ন্যাড়া ফিরছিল
একা দমদম থেকে
কম কম আলো পথের দু’পাশে
ভয় তাই ধরে ছেঁকে।
চমচম ছিল গণ্ডা পনেরো
তারই সুঘ্রাণ পেয়ে
ঝম্ঝম্ রাতে ভূতের ছানারা
পিলপিল এল ধেয়ে।
বমবম্ বলে কোচোয়ান ছোটে
গতিক খারাপ দেখে
গম্গম্ ভিড়ে ন্যাড়াও উধাও
চমচম ফেলে রেখে। |
|
খুকুর আঁকা গাড়ি
থাকতে নারাজ বাড়ি
রকেট সেজে একছুটে দেয়
মহাকাশে পাড়ি।
সামনে বাঁধা ঘোড়া
নেই জানা তার ওড়া
মহাকাশে ছুটতে গিয়ে
হয়ে গেল খোঁড়া।
তিনটে চাকা খুলে
চলল গাড়ি দুলে
ভীষণ বেগে চলছে সে যান
ঘোড়া গেল ঝুলে। |
|
বৃষ্টিদেশের জলপরী
তন্ময় ধর |
|
|
বৃষ্টি ফোঁটায় চোখ মেলে যা
শাওন রঙে যা খেলে যা
জলপরী যে তুই
রামধনুরং ওই যে ডানা
লিখলি তাতে কোন ঠিকানা
কোন আলোতে বল তো তোকে ছুঁই?
রূপকথা তুই স্বপ্ন রঙে
লুকোচুরির মেঘের ঢঙে
বৃষ্টি ধোয়া তুই যে চাঁপা-জুঁই
জলেই হাসি-কান্না এঁকে
নিজেকে তুই ফেলিস ঢেকে
হারিয়ে ফেলিস মেঘমুলুকের ভুঁই। |
|
আমি চাই
নীলানাথ দাস |
|
আগমনী
বিমলেন্দু চক্রবর্তী |
|
|
|
গরমেতে জ্বলে পুড়ে, হল প্রাণ হাঁসফাঁস
তাকিয়ে হঠাৎ দেখি, কিউমুলো নিম্বাস!
আমি তো অবাক হয়ে বলি এ কী কাণ্ড!
কোত্থেকে উড়ে এল মেঘটা প্রকাণ্ড?
মেঘ ডেকে বলে, ভাই, শোনো কথা দিয়ে মন,
বৃষ্টি এনেছি নানা, ভরে ব্যাগ কয় টন।
কোন ধরনের চাই, বল চটজলদি,
পরিমাণ বললেই মাপ মতো জলদি।
ঝিরঝিরে, রিমঝিম, ঝমঝম বরষা,
টিপটিপ, ঝুপঝুপ কোনটায় ভরসা?
আমি বলি, আমি চাই, ঝমঝম শব্দ,
গ্রীষ্মকে করবে যা নিদারুণ জব্দ।
‘তাই হবে’ বলল সে, শুরু হল বৃষ্টি,
দিগন্ত মুছে গিয়ে ঝাপসা যে দৃষ্টি! |
|
মেঘ করেছে আকাশ জুড়ে
বৃষ্টি এল ঝেঁকে
হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এল
সুয্যি দিলুম এঁকে।
রোদটা তখন দৌড়ে এসে
গড়িয়ে পড়ে হেসে
বৃষ্টি কোথায়, মেঘ পালালো
হাওয়ায় ভেসে ভেসে।
ঝলমলে এক সকাল এঁকে
রাতকে দিলাম ছুটি
বাগান ভরা ফুল ফুটেছে
অমনি গুটিগুটি।
গাছের মাথায় ফড়িং নাচে
আগমনীর সুরে
পাখিরা সব উড়তে থাকে
নীলমাখা রোদ্দুরে। |
|