বেশ কিছু রাজ্যে গুটখা ও পানমশলার উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনও সেই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়নি। এই অবস্থায় রাজ্যের মানুষকে মুখ ও গলার ক্যানসার থেকে বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গে গুটখা ও পানমশলার উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করেছে ক্যানসার সার্জেন এবং ডাক্তারি ছাত্রদের সংগঠন ডক্টরস ফর ইউ (ডিএফওয়াই)। আবেদন গ্রহণ করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, তারা ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি শুনবে।
আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী বরুণ চোপরা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (প্রহিবিশন অ্যান্ড রেসট্রিকশনস অন সেলস) রেগুলেশনস, ২০১১’ বা এফএসএসএআই-এর ২, ৩ এবং ৪ ধারা অনুযায়ী গুটখা-পানমশলা জাতীয় খাবার বিক্রি নিষিদ্ধ। কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে ১১টি রাজ্য নিষেধাজ্ঞা জারিও করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ করেনি।
ডিএফওয়াই-এর আবেদনে বলা হয়, গুটখা ও পানমশলা মুখ ও গলার ক্যানসারের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যনালি, শ্বাসনালি, অগ্ন্যাশয় ও পাকস্থলীর ক্যানসারের জন্যও অনেকাংশে দায়ী। তাই ওই সব সামগ্রী বিক্রি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করতে বলা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে। সেই অনুযায়ী কেরল, বিহার, রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো ১১টি রাজ্য পানমশলা ও গুটখা বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ডিএফওয়াই-এর পক্ষে মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের নাক ও মুখের ক্যানসার বিভাগের শল্যচিকিৎসক পঙ্কজ চতুর্বেদী বলেন, “আমাদের কাছে মুখ ও গলার ক্যানসার নিয়ে যে-সব রোগী আসেন, তাঁদের প্রতি চার জনের মধ্যে এক জন পশ্চিমবঙ্গের। আশঙ্কার কথা হল, ওই রোগীদের অধিকাংশেরই বয়স ২৪-২৫ বছর। ওই সব যুবককে জিজ্ঞাসা করে দেখেছি, তাঁরা ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে গুটখা বা পানমশলার নেশা ধরেছেন।”
চতুর্বেদী জানান, বিষয়টির ভয়াবহতা নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। পানমশলা ও গুটখা রুখতে রাজ্যের ক্যানসার চিকিৎসকেরাও এর আগে সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন বলে জানান ক্যানসার শল্যচিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়। |
