|
|
|
|
টাকার টোপ, চোর বনছে পড়ুয়ারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
সহজে রোজগারের ফাঁদে স্কুলের পড়ুয়ারা চুরির কাজে হাত পাকাচ্ছে। প্রথমে ঘুগনির লোভে ছোটখাটো চুরি। পরে ওরা পেশাদার চোর হয়ে উঠছে। ময়নাগুড়ির দোমহনি এলাকায় পরপর চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুধবার রাতে পাঁচ জনকে গ্রেফতারের পরে পুলিশি জেরায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। ধৃতদের মধ্যে তিনজন ছাত্র। পুলিশ জানায়, ওই ছাত্রদের মধ্যে রাজু মল্লিক ও বিক্রম বৈদ্য দোমহনি পলহোয়েল হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। অন্য জন ধূপগুড়ির বাসিন্দা স্থানীয় হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। গত ৩১ অগস্ট তিন সাগরেদকে সঙ্গে নিয়ে রাজু ও বিক্রম নিজেদের স্কুলেও চুরি করে। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের নিয়ে সভা করে পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী হয়েছেন। ময়নাগুড়ি থানার আইসি বিশ্বনাথ হালদার বলেন, “প্রথমে মনে করেছিলাম ধৃতরা নেশার সামগ্রী কেনার টাকা জোটাতে চুরি করেছে। কিন্তু জেরার মুখে ওরা জানায় ভিন রাজ্যে থাকা এলাকার পরিচিত এক যুবক সহজে মোটা টাকা রোজগারের টোপ দিয়ে চুরির কাজে নামায়। ওই যুবকের খোঁজ চলছে।” পুলিশ জেনেছে, ভিনরাজ্যে থাকা ওই যুবকের নাম দেবজিৎ রায়। সে পুনেতে দিনমজুরির কাজ করে। বাড়ি মরিচবাড়ি এলাকায়। কয়েক বছর থেকে সে পুনেতে। মাঝেমধ্যে গ্রামে আসে। তখন রাজু ও বিক্রমদের সঙ্গে কথা হয়। কয়েক মাস আগে গ্রামের বাড়িতে ফিরে ওই দুই পড়ুয়াকে সে চুরি করে টাকা রোজগারের টোপ দেয়। আইসি জানান, দেবজিৎ ওদের বলে কম্পিউটার, মোবাইল ফোনের মতো সামগ্রী চুরি করে কোনও একখানে জমা করে রাখলে সে বিক্রির ব্যবস্থা করে দেবে। বিনিময়ে ভাল টাকা পাবে। পাঁচজনের চুরির চক্রটিও বাইরে বসে দেবজিৎ গড়ে দেয় বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। পড়ুয়ারা জুন মাস থেকে দোমহনি এলাকার বিভিন্ন দোকানে চুরি শুরু করে। শেষ চুরি হয় পলহোয়েল হাই স্কুলে। পুলিশ জানায়, চুরি করা সামগ্রী জমা রাখা হয় বিক্রমের বাড়িতে। বুধবার রাতে চুরি করতে বার হলে দলটি ধরা পড়ে। ছাত্রদের কান্ডকারখানা জেনে অবাক হয়েছেন পলহোয়েল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতমেন্দু নন্দী। তিনি বলেন, “খুবই লজ্জাজনক ঘটনা। আমরা স্তম্ভিত।” কেমন ছাত্র ছিল রাজু ও বিক্রম! প্রধান শিক্ষক জানান, ছেলে দুটি স্কুলে কম আসত। লেখাপড়াতেও মন ছিল না। কিন্তু দেখে কখনও মনে হয়নি ওরা চুরি চক্রে জড়িয়েছে। ঘটনার জন্য তিনি সামাজিক অবক্ষয়কে দুষেছেন। গৌতমেন্দুবাবু বলেন, “সহজ পথে কাঁচা পয়সা রোজগারের নেশায় ছেলেরা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। একা স্কুলের পক্ষে ওই সামাজিক সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আমরা দু’এক দিনের মধ্যে আভিভাবকদের নিয়ে আলোচনায় বসব। অনুরোধ রাখব তাঁরা যেন বাড়িতে ছেলেদের গতিবিধির উপরে নজর রাখেন।” |
|
|
|
|
|