|
|
|
|
মদের দোকান খোলা নিয়ে বিবাদ জলপাইগুড়িতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
এলাকায় মদের দোকান খোলাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়ির জয়ন্তীপাড়ায়। সম্প্রতি আবগারি দফতর থেকে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া জয়ন্তীপাড়া এলাকায় একটি মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে তার পর থেকেই বাসিন্দারা বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকেন। চলতি মাসের প্রথমে মদের দোকানটি চালু হওয়ার পরে ফের বাসিন্দারা আবগারি দফতর এবং জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এর পরেই মদের দোকানের মালিকের তরফে আন্দোলনকারীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকার কিছু বাসিন্দার নামে গলার হার ছিনতাই, চুরির চেষ্টা করার ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করে আন্দোলন থামিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার বাসিন্দারা একযোগে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, মদের দোকান নিয়ে যাতে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে কাউন্সিলারের সই জাল করে, নকল সম্ম তি পত্র তৈরি করে মদের দোকানটি চালানোর অভিযোগও উঠেছে। কাউন্সিলারের তরফে ঘটনাটি জানিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যানকে অভিযোগ করা হলেও এখনও সই জাল করার বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ হয়নি।
এলাকার কাউন্সিলর নারায়ণচন্দ্র দাস বলেন, “আমার নামে সই জাল করে মদের দোকানের সম্মতি আদায় করা হয়েছে। আমার নামে তৈরি ভুয়ো প্যাডে সন্মতির চিঠি পাঠানো হয়েছে আবগারি দফতরে। লিখিতভাবে বিষয়টি আবগারি দফতরে জানিয়েছি। অবিলম্বে মদের দোকানের লাইসেন্স বাতিল করা হোক। মদের দোকানের বিরোধিতা করে যাঁরা আন্দোলন করছে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।”
যদিও জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনও এলাকায় মদের দোকানের লাইসেন্স দিতে কাউন্সিলর বা এলাকাবাসীর ছাড়পত্র প্রয়োজন হয় না। আবগারি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “যেহেতু কাউন্সিলরের ছাড়পত্র প্রয়োজন হয় না, তাই সেই ছাড়পত্রটি আসল না জাল তা নিয়ে তদন্তের অবকাশ নেই।”
জয়ন্তীপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জনবসতি এলাকায় মদের দোকান খোলা হলে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। আগামী সোমবার বাসিন্দাদের তরফে সদর মহকুমা শাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হবে। মদের দোকানের লাইসেন্স প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী সপ্তাহেই কদমতলা মোড়ে এলাকার বাসিন্দারা অবস্থানে বসবেন বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা আইনজীবী শুভ্রাংশু চাকী জানান, যেখানে মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ। বসতি এলাকায় মদের দোকান হলে পরিবেশ নষ্ট হবে। যেহেতু দোকানে মদ পান করার ব্যবস্থা রয়েছে সে কারণে প্রকাশ্যেই মদ্যপান শুরু হয়েছে। ফলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হবে। এলাকার মহিলারা এখনই সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বার হতে ভয় পাচ্ছেন। অন্য দিকে, মদের দোকানের লাইসেন্স যিনি পেয়েছেন সেই ধরম পাশোয়ান বলেন, “আইন মেনেই লাইসেন্স পেয়েছি. এলাকায় যাতে কোনও শান্তিশৃঙ্খলা বা নিরাপত্তার সমস্যা না হয় তার দিকে সর্তক নজর রাখা হবে। আমাদের পক্ষে কোনও মিথ্যে মামলা করা হয়নি।” জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি কোকিলচন্দ্র রায় বলেন, “এলাকায় যাতে শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|