বাম আমলে শিক্ষা ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিকরণের নামে যে ‘দলতন্ত্রে’র অনুপ্রবেশ ঘটেছিল, তার সমালোচনায় ফের সরব হলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র। বর্ষীয়ান এই প্রাক্তন মন্ত্রীর মতে, বশ্যতাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে ‘উত্তম’কে সরিয়ে রেখে ‘মাঝারি’ ও ‘অধম’-এর ‘বন্দনা’ করা হয়েছিল বাম আমলে।
একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদে ভারত সভা হলে আয়োজিত নাগরিক কনভেনশনে শুক্রবার অশোকবাবু বলেন, “নিজেদের মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠা করতে আমরা সেই আদর্শে বিশ্বাসী মানুষকেই বিভিন্ন জায়গায় উঁচু পদে বসিয়েছি। ভাবনাটা ভাল। কিন্তু এটা করতে গিয়ে আমরা বশ্যতাকে গুরুত্ব দিয়েছি। যোগ্যতাকে নয়।”
মূলত বামপন্থী শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ‘বাম-ঘনিষ্ঠ’রাই আলোচনাসভাটির আয়োজন করেছিলেন। অশোকবাবু সেখানেই ব্যাখ্যা করেছেন, বামেরা যে ভাবে শিক্ষার গণতান্ত্রিকরণ করার চেষ্টা করেছিল, সেই পদ্ধতিটাই ছিল ভুল। এই ভুলের ফলে একটা সময়ে ‘উত্তমকে বিসর্জন’ দিয়ে ‘মাঝারিকে বন্দনা’ ও ‘অধমকে আরাধনা’ করা হয়েছে। বাম আমলেই অর্থমন্ত্রী ছিলেন অশোকবাবু। সেই জমানার আত্মসমালোচনা করেই অশোকবাবু এ দিন বলেছেন, “দক্ষতার অভাবে গোটা প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। মানুষ বামপন্থীদের উপরে বিশ্বাস হারিয়ে, বীতশ্রদ্ধ হয়ে এক খামখেয়ালি মহিলাকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করেছেন! এখন মানুষের বিশ্বাস ফিরে পেতে পরিশ্রম করতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে।” শিক্ষায় ‘দলতন্ত্র’ কায়েমের প্রশ্নে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অবশ্য পুরোপুরি মানতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন এক মন্ত্রীর দাবি, “এই রকম একটা প্রচার সুকৌশলে চালু আছে। শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বত্র সব পদে শিক্ষাগত পরিচয় সরিয়ে রেখে শুধু দলীয় পরিচয় দেখে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বসানো হয়েছিল, ঘটনা আদৌ তেমন নয়। কোথাও কিছু ক্ষেত্রে ভুল হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন আরাবুল ইসলামের মতো কেউ, এমন জিনিস বাম আমলে হয়নি!” |