|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
বিয়ে করেছি তো কী, প্রেম করতে অসুবিধে কোথায় |
না হলে যে গানটাই গাইতে পারব না। কার সঙ্গে প্রেম?
লোপামুদ্রা মিত্র-র সঙ্গে আড্ডা মারলেন বিপ্লবকুমার ঘোষ |
এখন প্রায়ই আপনি বলেন বিয়ে একটা, প্রেম অনেক। শেষমেশ গানে উৎসাহ আনতে প্রেমই ভরসা?
প্রেম ছাড়া জীবন অচল। বিয়ে তো সামাজিক বন্ধন, দায়িত্ব এবং নিয়ম। তাই বলে প্রেম করতে অসুবিধে কোথায়? আমি মনে করি প্রেম জিইয়ে রাখতে পারলে ঠিকঠাক কাজ করা যায়। উৎসাহ পাওয়া যায়। আমার গানের সব উৎসাহ এই উদার প্রেম। এখন প্রেমে পড়েছি কার, জানেন? না থাক বলব না। কারও সঙ্গে শেয়ার করা ঠিক হবে না। করলেই কেলেঙ্কারি।
তবে অনেকেই বলছেন, ইদানীং আপনি কেমন অন্যমনস্ক হয়ে থাকেন। সেই পরিচিত হাসিটা আর দেখাই যায় না। কিছু ‘গরমিল’ মনে হচ্ছে?
কোনও গরমিল নেই। তবে ভীষণ মন খারাপ হয়। একা একা চুপ করে বসে থাকি। সেই মুহূর্তগুলি কেউ দেখলে অন্য কিছু ভাবতেই পারেন।
এর জন্য পারিবারিক ‘একাকিত্ব’ দায়ি?
না। তবে মাকে হারিয়ে আমি সত্যিই একা। এ ছাড়া আর কোনও একাকিত্ব আমার জীবনে নেই। তবে জীবনে আরও একটি বড় দুঃখ পেয়েছি, তা হল আমার প্রথম গানের দল ভেঙে যাওয়ায়। দু’ বছর তো ওদের ভীষণ মিস করেছি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সবই তো মেনে নিতে হয়।
এত ভাঙা-গড়ার পরেও কিন্তু বাজারে আপনার নামে কোনও বদনাম বা কুৎসা নেই। শিল্পীরাও চুপ। এমন হয় কী করে?
মনে হয়, আমাকে সবাই খুব ভয় পায়। কানে যদি আসে তবে তার ছাড় নেই। সরাসরি ফোন। দেখা হলে আরও বিপদ। |
|
কেন মারবেন নাকি?
নিন্দে শুনলে কেন মারব না? কোথায় ইন্ডাস্ট্রির সবাই মিলে জোট বেঁধে লড়াই করব, তা না উঠতে বসতে পর নিন্দা পর চর্চায় একে অন্যকে টেনে নামাব। একবার কেউ করুক আমার নামে, দেখাব মজা।
ইদানীং প্রায়ই দেখা যায় হন্তদন্ত হয়ে একা একা লেকের দিকে হাঁটছেন। ইদানীং সব প্রেম কী ওই লেককে ঘিরেই?
শুধু প্রেম নয়, মন উজাড় করার এক নিভৃত মনের কান্ডারি। ‘আমার সব যে আছে ওখানে লুকিয়েই।’
আপনাকে বোঝা মুশকিল। বোকার মতো একা একা ফুচকা খান ফুটপাতে দাঁড়িয়ে!
খাই তো। এটা আজকের অভ্যাস নয়, বহু কালের। আগে লোকে চিনত না, এখন চেনে। তাই নানা রকম গল্পও ফাঁদে।
জীবনে লড়াই তো কম করলেন না। এখনকার গান-বাজনার পরিবেশ দেখে আপনি নাকি বিরক্ত?
না, ভুল ধারণা। বরং এখন ভাল লাগছে, অনেকেই এই পেশায় আসছেন। গান শেখার স্কুলগুলোতে ভিড় বাড়ছে। অনুষ্ঠানে আগে যারা আসতে চাইতেন না তাঁরাও গান শুনতে আসছেন। সবচেয়ে বড় কথা, গানবাজনার পেশাকে যাঁরা সম্মান দিতেন না, এখন দিচ্ছেন।
কিন্তু গানবাজনা তো এখন ‘ব্যবসা’। বিনোদন নয়। ক্যাসেট কোম্পানিই বলে দিচ্ছে কী গান গাইবেন। আপনি প্রতিবাদ করে এক বার সেই কোম্পানি ত্যাগ করেছিলেন।
হ্যাঁ। গান গেয়ে প্রতিবাদ। জানেন তো ওই সংকলনে একটি গান ছিল যা থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তরও মিলে যাবে।
‘তোমরা বলছো এ গান গেয়ো না,
তোমরা বলছো পথ ছাড়ো,
তোমরাই বেঁধে দিচ্ছো
পথ, এটা নয়, ওটা করো
তোমরা কে হে?’
কেমন প্রতিবাদ বুঝতে পারলেন তো? তবে ঠিক, ওই সিডি বাজারে বেরিয়েছিল। শিল্পীর স্বাধীনতা কেউ বেঁধে দিতে পারে না।
গত কয়েক বছর ধরেই পুজোর গানে ভাঁটা চলছে। রবিঠাকুর উতরে দিয়েছেন। এ বার শুনছি গানেও পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। পুজোয় আপনার প্রস্তুতিটা ঠিক কেমন?
আমি অত বুঝি না। আমার গানের জীবনের শুরুই হয়েছিল বিভিন্ন কবির কবিতা থেকে গান গেয়ে। বহু বছর পরে আবার সেটাই করছি। পূর্নেন্দু পত্রীর ‘যে টেলিফোন আসার কথা’, জয় গোস্বামীর ‘তারা ঢাকা মেঘ, মেঘে ঢাকা তারা’, জীবনানন্দ, শঙ্খ ঘোষ, এমনকি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা থেকেও গান করেছি। আমার প্রথম জীবনের সেরা গানের সেই রূপকার সুরকার সমীর চট্টোপাধ্যায় যথারীতি এ সব গানে সুর দিয়েছেন। আর কোম্পানিও সেই, প্রথম যাদের হাত ধরেছিলাম সারেগামা।
জয় মানে আপনার স্বামী শ্রেয়া বা শ্রীকান্তদের গানের জন্য এত সময় দিচ্ছেন, কিন্তু আপনার জন্য নেই।
গত দু’ বছর ও খুব ব্যস্ত। ওকে ডিস্টার্ব করি না। গত বছরেও পুজোর গানে ও ছিল না। এ বারও নেই। নিজের ঘরের লোক বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমি চাই আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ও আরও নিজের মতো নিজের জায়গায় কাজ করুক।
এ তো অভিমানের কথা......
না, না। কোনও অভিমান নয়। অন্যের গলায় ভাল গান শুনতে আমি গর্ব বোধ করি।
এ বার তো শুনছি খুব ভাল ভাল আধুনিক গানের অ্যালবাম বেরোচ্ছে। বাংলা গানের পালে হাওয়া লাগল বুঝি?
লাগলে আমরা সবাই বাঁচি। কিন্তু সন্দেহ আছে। গত কয়েক বছর কোনও বেসিক গান ঠিকমতো হিট করছে না।
তার মানে আশাবাদী নন?
কী করে আশা জাগবে? মানুষ যে ঠিক কী চাইছেন সেটা বোঝাই তো মুশকিল। তবুও আশায় থাকা। |
|
|
|
|
|