|
মনোরঞ্জন ১... |
|
পত্রিকায় বিপাশা |
এবিপি নিউজ রুম থেকে সটান ঢুকে পড়লেন পত্রিকা দফতরে। সঙ্গে মহেশ ভট্ট। ইমরান হাসমি।
খবরের চেয়ে চুটিয়ে আড্ডাই হল বেশি। সেই আড্ডায় শরিক হলেন ইন্দ্রনীল রায় |
বিপাশা বসুর চোখে সৃজিত মুখোপাধ্যায় জিনিয়াস।
ইমরান হাসমি স্বীকার করলেন কোনও দিনই নাকি অভিনেতা হতে চাননি। চেয়েছিলেন শুধু ধনী হতে।
আর মহেশ ভট্ট পরিষ্কার বলে দিলেন তিনি আর কোনও দিন ছবি পরিচালনা করবেন না।
আনন্দবাজারে শনিবারের পত্রিকা দফতরে সেদিন বসে খোলামেলা আড্ডায় এমনই সব কথা বলছিলেন ত্রিমূর্তি।
‘রাজ থ্রি’ ছবির প্রচারে আসা বিপাশা বসুকে অবশ্য দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেন নিজের ঘরে ফিরে এসেছেন। |
|
আনন্দবাজারের শনিবারের ‘পত্রিকা’তেই তো তাঁর প্রথম কলম লেখা। যা যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। হাসমিকে অনেকটা স্মৃতিকাতর হয়েই বললেন বিপাশা। শুধু তাই নয়, এক সময় ‘সানন্দা’ পত্রিকায় নিয়মিত তাঁকে নিয়ে লেখা ও ছবি বেরোত, কথায় কথায় সে কথাও মনে পড়ে গেল বিপাশার।
কালীঘাট মন্দিরে দেবী দর্শন করে এসে মহেশ ভট্টের মনে পড়ে গেল তাঁর ছেলেবেলার কথা। “তখন আমি ছোট ছিলাম। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে দুর্গাপুজোর সময় যেতাম। দুর্গা মূর্তি দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। ঠিক সেই অনূভূতিটাই এত বছর বাদে কালীঘাটে এসে হল,” বললেন এই প্রবীণ চিত্র পরিচালক।
খাঁটি বাঙালির মতো শাড়ি পরিহিতা বিপাশা বললেন, “কিছু দিন আগেই সৃজিতের সঙ্গে মুম্বইতে দেখা হয়েছিল। আমার জিমের বাইরে। আমরা কফি খেলাম। আমি ওর ‘অটোগ্রাফ’ আর ‘বাইশে শ্রাবণ’ দেখেছি। আরেকটা ছবি করেছে ‘হেমলক সোসাইটি’। সেটাও খুব ভাল। আমি মনে করি ও জিনিয়াস। ইচ্ছা আছে ওর সঙ্গে কাজ করার। ওকে বলেওছি আমার কথা ভেবে দারুণ একটা চিত্রনাট্য লিখতে”, হেসে বললেন বিপাশা।
মনে হল তিনি বেশ সিরিয়াস। কথার কথা বলছেন না মোটেও।
বিপাশা আর ইমরান দু’জনেই ছিলেন ভিশেষ ফিল্মস আর মহেশ ভট্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মহেশ ভট্টই যে নিজের হাত গড়েছেন ওঁদের কেরিয়ার।
“মহেশজি বিশাল মনের মানুষ। যখন হতাশা আঁকড়ে ধরে মহেশজি জানেন ঠিক কী ভাবে নিজেকে অনুপ্রাণিত করে সেই সময়টা কাটিয়ে ওঠা যায়।” বললেন ইমরান। বলিউডের অন্যতম এই নায়ক আজ ভুলেই গেছেন ফ্লপ বা ব্যর্থতা কী। ‘ওয়ানস্ আপঅন এ টাইম ইন মুম্বই থেকে ‘ডার্টি পিকচার’---ইমরান জানেন ঠিক কোন ছবি তাঁর করা উচিত। |
|
তাঁর কাজ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে বিপাশা বলে উঠলেন,“আমার এক পরিচালক বন্ধু একটা চিত্রনাট্য লিখেছে। ও চায় যে ইমরান সেটা পড়ুক। না ইমরানকে অভিনয়ে নেওয়ার জন্য নয়। এটা জানার জন্য ছবিটা আদৌ চলবে কি না! ইমরান যে পাবলিকের নাড়ি নক্ষত্র জানে।”
ইমরান কিন্তু খুবই বিনয়ী। যখন জিজ্ঞেস করা হল বলিউডে কত জন তাঁকে সলমন খানের সঙ্গে তুলনা করে, অত্যন্ত লাজুক ভাবেই তাঁর উত্তর “ না, না আরে আমাকে সলমন খানের সঙ্গে তুলনা করবেন না। ও খুব বড় স্টার। আমি তো এই সবে নিজের কেরিয়ার শুরু করলাম। আমার গাড়ি তো সবে সেকেন্ড গিয়ারে।”
পত্রিকা দফতরের এই আড্ডায় তথাকথিত প্রচারমূলক সাক্ষাৎকারের মেজাজ আদৌ ছিল না। নিছকই কফির কাপে জমিয়ে গল্প করা। মহেশ ভট্ট বলছিলেন সিনেমার বদলে যাওয়া নিয়ে কত কথা। ভট্ট সাহেব আনন্দবাজার পত্রিকার ইতিহাসেও মজলেন। এবিপি-র লম্বা করিডরে আটকানো একের পর এক স্মৃতির টুকরোর সামনে দাঁড়িয়ে পড়তে শুরু করলেন বাংলায় সবথেকে বহুল প্রচারিত দৈনিকের ইতিহাস।
এক ঘণ্টার লম্বা আড্ডা শেষে এল বিদায়ের পালা। তখনই আবেগঘন কথাটা উঠে এল। বিপাশা বসু এর আগে যত বারই এ শহরে এসেছেন সঙ্গে ছিল সব সময়ই এক ‘হ্যান্ডসাম’। কিন্তু এখন সেই দু’জন চলে গিয়েছেন দুটো আলাদা পথে।
কলকাতায় এলে পুরনো স্মৃতি জেগে ওঠে না? বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করার আগে আনন্দবাজার অফিসে কাটানো সেই দিনগুলো কি মনে পড়ে না?
“ দেখুন অতীত আমাকে তেমন নাড়া দেয় না। স্মৃতিগুলো সব সময়ই ঝাপসা। সেগুলো ফেরতও আসে না চট করে।” বিপাশার এই কথা থেকেই বোঝা যায় কী মানসিকতা নিয়ে জীবনে পথ চলেন।
তার মানে কি দাঁড়াল জনও এখন ঝাপসা?
এটা আর আমরা সহকর্মীরা কেউ ওঁকে জিজ্ঞেস করিনি। |
|