|
|
|
|
পশ্চিমে জেলা পরিষদ |
সমস্যা সমাধানে যৌথসভায় আস্থা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এক সপ্তাহ আগে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে জেলা পরিষদে। সেই বৈঠকের সূত্র ধরেই আপাতত ন’টি সমস্যা চিহ্নিত করা হল। সমস্যা সমাধানে যৌথ সভার উপরই আস্থা রাখছেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতে, জেলা স্তরে বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের বৈঠক হলে এই সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে। রাজ্য সরকার এখন পঞ্চায়েতকে ‘এড়িয়েই’ কাজ করার চেষ্টা করছে। বিডিওদের বাড়তি ‘দায়িত্ব’ নিতে বলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা পরিষদের এই বক্তব্য প্রশাসনকে ‘চাপে’ রাখার ‘কৌশল’ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে, সেখান থেকেই ন’টি সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে, জেলা স্তরে বিডিওদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের যৌথ সভা হলে সমস্যা এতটা জটিল হত না।” কোন কোন প্রকল্পের টাকা পড়ে রয়েছে, ঠিক কী কারণে সময়ের মধ্যে প্রকল্প রূপায়িত করা যাচ্ছে না, সমস্যা কোথায়, এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই গত ৩০ অগস্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের নিয়ে এক বৈঠক করেন জেলা সভাধিপতি। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ অবশ্য একে ‘রুটিন’ বৈঠক বলেই দাবি করেছেন। ওই বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে, উদ্ভুত সমস্যাগুলোর কী ভাবে সমাধান হতে পারে, তা নিয়ে একটি ‘নোট’ও তৈরি করা হয়েছে। তারই শেষের দিকে লেখা রয়েছে, ‘উল্লেখিত দুর্বলতাগুলি কাটিয়ে উঠতে জেলা স্তরে বিডিও ও সভাপতিদের যৌথ সভার প্রয়োজন বলেই মনে করছি।’
প্রকল্প ধরে ধরে সমস্যার উল্লেখ করা হয়েছে ওই নোটে। যেমন
১) তফসিলি জাতি-উপজাতি শংসাপত্র বিলির ক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ায় এবং ব্লকে কোনও আলাদা সেল না থাকায় মানুষজন ব্যক্তিগত সংস্থার দ্বারস্থ হচ্ছেন। অর্থ খরচের মধ্য দিয়ে হয়রান হচ্ছেন। এই মুহূর্তে প্রায় ১৪ হাজার প্রাপক এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
২) বেশ কিছু ব্লকে কৃষি পেনশনের প্রাপকরা এক বছরেরও ভাতার টাকা পাচ্ছেন না।
৩) আমার ঠিকানা প্রকল্পে প্রশাসনিক অন্যমনস্কতায় ২০১১-’১২ আর্থিক বছরের প্রাপক তালিকা রাজ্য স্তরে না পাঠানোয় জেলার গরিব মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন।
৪) তফসিলি উপজাতি পেনশনের ক্ষেত্রে জেলা থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত টাকা বরাদ্দ হলেও গড়বেতা ১, সবং, শালবনি ব্লকের প্রাপকেরা ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টাকা পেয়েছেন।
৫) এনওএপিএস প্রকল্পের প্রায় ৩ হাজার প্রাপক এক বছর ধরে টাকা পাচ্ছেন না।
৬) বিআরজিএফ, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন-সহ কয়েকটি প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা ব্লক স্তরে পড়ে রয়েছে।
৭) একশো দিনের কাজ প্রকল্পে প্রায় ২৪ কোটি টাকা বকেয়া। অলিখিত ভাবে সকল ব্লকেই শ্রম দিবসের কাজ বন্ধ (বর্ষায় অবশ্য এমনিতেই কাজের গতি কমে আসে)।
৮) ইন্দিরা আবাস যোজনায় ২০১০-’১১ এবং ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে প্রায় ৫২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। খরচ হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। খরচের হার একশো শতাংশ না হলে ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে বরাদ্দ পাওয়া যাবে না।
৯) এএফবিএস প্রকল্পে ৫৫০ আবেদনকারী প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সভাধিপতি বলেন, “বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ কেন ব্যাহত হচ্ছে খতিয়ে দেখতে গিয়ে মনে হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়ের মধ্যে ফাঁক থেকে যাচ্ছে।” সভাধিপতির মতে, “বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের যৌথ সভাই এই পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে!” |
|
|
|
|
|