ছেলেটাকে প্রথম দেখি ২০০০ সালে নাইরোবিতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হচ্ছিল ওখানে। প্রথম দেখাতেই ও মনে একটা দাগ রেখে গিয়েছিল। যা এখনও মুছে যায়নি।
ছেলেটা, মানে যুবরাজ সিংহকে দেখে প্রথমেই যে ধারণ হয়েছিল, সেটা হল, ও একটা হিরে, যার পালিশ দরকার। যুবরাজের মনোভাব ছিল, ‘আরে ওদের আসতে দাও না, তার পর দেখে নেবো’। শুধু যুবরাজের নয়, ভারতীয় তরুণ প্রজন্মের মনোভাবটাই ছিল ও রকম।
যুবরাজকে নিয়ে আমার অনেক ভাল ভাল স্মৃতি আছে। শনিবার যখন ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নতুন করে ক্রিকেট জীবন শুরু করবে, আমার আশীর্বাদ থাকবে ওর সঙ্গে। যুবরাজের কাছে ব্যাপারটা নিছক ক্রিকেট নয়, জীবনকেও নতুন করে উপভোগ করবে ও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দেশকে দিয়েছে যুবরাজ। ২০১১ বিশ্বকাপে হয়েছে সেরা ক্রিকেটার। কিন্তু শনিবার যুবরাজ পরিচিতি পেয়ে যাবে জীবন যুদ্ধে জয়ী এক মানুষ হিসাবে। |
যুবরাজের মাঠে ফেরা নিয়ে অবশ্য নানা কথা হচ্ছে। সবাই ওর প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে একমত নন। যাঁরা ওকে ভালবাসেন, ওর ক্রিকেটীয় দক্ষতাকে ভালবাসেন, তাঁরা উদ্বিগ্ন একটা ব্যাপার নিয়ে। যুবরাজের প্রত্যাবর্তন কি একটু তাড়াতাড়ি হল? আমি যুবরাজকে দেখছি এমন এক মানুষ হিসাবে যে ক্যানসারকে জয় করেছে। যে সবার কাছে একটা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে জীবনকে উপভোগ করো। যুবরাজের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।
এ বার সচিনের কথায় আসি। চল্লিশ ছুঁইছুঁই বয়স পর্যন্ত খেলা মানে ‘অবসর’ নামক খাঁড়াটা মাথার উপর ঝুলবেই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে মনে পড়ছে, আরও কয়েকটা রানের জন্য কী ভাবে ক্রিজে পড়ে থাকতাম। শেষমেশ ৩৮ বছর বয়সে অবসর নিয়েছিলাম। কিন্তু তার আগের তিনটে বছর আমাকে নিয়ে কোনও লেখা বা ধারাভাষ্যকারদের বক্তব্যে সব সময় অবসরের কথাটা ঘুরেফিরে আসত। সেটা হয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। ভারতে সেই লেখা বা বক্তব্যের সংখ্যাটা অন্তত কয়েকশো গুন বেশি। সত্যি বলতে কী, ক্রিকেটারের কাছে এই মন্তব্যগুলো বিরক্তির কারণ ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিষয়টা নিয়ে নিরপেক্ষ ভাবে কিছু বলা আমার পক্ষে কঠিন। কারণ ভারতের কোচ হিসেবে সচিনের সঙ্গে প্রায় পাঁচ বছর কাজ করেছি। সত্যি বলছি, চারটে ইনিংসের মধ্যে তিন বার যে সচিন বোল্ড হয়েছে তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। নিউজিল্যান্ড সফরে ওর সর্বোচ্চ স্কোর ২৭ আর গড় ২১ এটাও আমার কাছে চিন্তার বিষয় নয়। কেউ ওকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার আগেই সচিন ঠিক বুঝে যাবে কখন ওর সরে যাওয়ার সময় হয়েছে। নির্বাচকদের মাথায় এখন একটাই চিন্তা থাকার কথা। সচিনের জায়গাটা কে নেবে?
টি-টোয়েন্টি সিরিজের কথায় ফিরি। দু’দলের মধ্যে ভারতই এগিয়ে। তবে নিউজিল্যান্ডের তুরুপের তাস ড্যানিয়েল ভেত্তোরি। হরভজন ফিরছে দেখে খুব ভাল লাগল। আমার বিশ্বাস ও এখনও শেষ হয়ে যায়নি। |