হেঁয়ালির নাম ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন। গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে এই জঙ্গি সংগঠন। দেশের বিভিন্ন শহরে হামলার ছক কষা হচ্ছে। কেউ কেউ গ্রেফতারও হচ্ছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে সংগঠনের কোনও সুলুকসন্ধানই মিলছে না।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের একটি দলের কাছে অন্য দল সম্পর্কে কোনও খবরই থাকে না। এতটাই গোপনীয়তা বজায় রেখে এই সংগঠনে কাজ হয় যে একটা ছোট দলের মধ্যেও একজন শুধু নিজের কাজটুকুই জানে। দলের অন্য সদস্যরা কী কাজ করছে তা নিয়ে তার কাছে কোনও তথ্যই থাকে না।
আজ রাজ্য পুলিশের ডিজিদের সম্মেলনে তাই নতুন করে সমস্ত রাজ্যকে সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্র। ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লি-সহ নানা রাজ্যে নিজেদের নতুন শাখা সংগঠন তৈরি করে ফেলেছে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন। কোনও কোনও শাখা একাধিক রাজ্যে একসঙ্গে কাজ করছে।
এই পরিস্থিতিতে সার্বিক ভাবে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে মামলা করে এনআইএকে তদন্তে নামতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরিকল্পনা হল, এই মামলার ভিত্তিতে গোটা দেশেই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে পারবে এনআইএ। তবে মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতৃত্ব এখন পাকিস্তানে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।
দিল্লি পুলিশের রিপোর্ট বলছে, যে শহরে হামলা হবে, সেই শহরে আগে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের একটি ‘স্লিপার সেল’ বসিয়ে দেওয়া হয়। এই ‘স্লিপার সেল’-এর সদস্যরা ওই এলাকার ছবি, ভিডিও তুলে আনে। সেই অনুযায়ীই হামলার দিনক্ষণ স্থির হয়। এ ভাবেই ২০০৬ সাল থেকে অন্তত ১০টি সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে মুজাহিদিনরা। কোনও ঘটনাতেই মূল ষড়যন্ত্রীদের টিকিরও নাগাল মেলেনি।
আজ দিল্লি পুলিশের তরফে রাজ্যের শীর্ষ পুলিশকর্তাদের জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংগঠন আইএসআই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে মদত জোগাচ্ছে। ভারতীয় তরুণদেরই মগজ ধোলাই করে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামের ‘সন্ত্রাসবাদী তৈরির কারখানা’ তৈরির ছক কষেছে আইএসআই। ফলে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলা কঠিন হয়ে পড়ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের তরফে বিভিন্ন শহরের ছোটখাটো অপরাধীদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। নিরাপত্তা সংস্থার ওয়েবসাইট বা কম্পিউটার হ্যাক করা বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে গোপনে তথ্য আদানপ্রদানের জন্য মোটা টাকার বিনিময়ে পেশাদার সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। |