একশো দিনের কাজে যাতে গতি এবং স্বচ্ছতা বজায় থাকে, তার জন্য প্রযুক্তি জোগাতে রাজ্যের কাছে বরাত পেল টিসিএস। সেই অর্থে সিঙ্গুর নিয়ে তিক্ততার পর এই প্রথম টাটা গোষ্ঠীর কোনও সংস্থার সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবে দু’টি বিষয় যে এক করে দেখার নয়, তা-ও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন পঞ্চায়েত-মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, সিঙ্গুর প্রসঙ্গ ছাড়া টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোনও বিরোধ নেই।
গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প ঢেলে সাজতে আরও অনেক বেশি করে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার চায় রাজ্য। সে জন্যই ১০০ দিনের কাজে বায়োমেট্রিক পরিচিতি ও অনলাইন পদ্ধতি কার্যকর করতে টাটা গোষ্ঠীর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস-এর সঙ্গে শুক্রবার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে চুক্তি করেছে তারা। পরে এ নিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “টাটাদের সঙ্গে আমি সরকারের সন্ধি করিয়ে দিলাম, এমন যেন কেউ না ভাবেন। পঞ্চায়েত দফতর বায়োমেট্রিক কার্ড চালু করতে চেয়ে টেন্ডার ডেকেছিল। নিজেদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার জন্যই বরাত পেয়েছে টিসিএস।” তাঁর দাবি, “সিঙ্গুর নিয়ে বিরোধ আলাদা বিষয়। অন্য কাজে তার প্রভাব পড়বে কেন? আমাদের মধ্যে এ ছাড়া কোনও বিরোধ নেই।”
মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতেই ১০৩ কোটি টাকার এই চুক্তি করেছে পঞ্চায়েত দফতর। সুব্রতবাবুর দাবি, প্রযুক্তি ব্যবহারে বিষয়টিতে স্বচ্ছতা আসবে। সহজ হবে নজরদারি। কাজ পাবেন বেশি সংখ্যক মানুষ। দিনমজুরিও মিলবে সেই দিনই। ‘পাইলট’ প্রকল্পের জন্য দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাকে বাছা হয়েছে বলেও জানান তিনি। টিসিএস-এর অন্যতম কর্তা তন্ময় চক্রবর্তীর দাবি, এক বছরের মধ্যে সব জেলায় প্রকল্প চালু করা যাবে। চালুর পর ৫ বছর তা দেখাশোনাও করবে টিসিএস।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারীও। তাঁর উদ্দেশে সুব্রতবাবু বলেন, “এ রাজ্যে অস্থায়ী অদক্ষ শ্রমিকদের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ১৭১ টাকা। কিন্তু সেখানেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ১০০ দিনের কাজে মজুরি দিচ্ছে ১৩৪ টাকা। এটা ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রেও মজুরি অন্তত ১৭১ টাকা হওয়া উচিত।” এ নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশকে চিঠি দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন সুব্রতবাবু। |