ছুটির দিন ছিল না। রবিবারও-- না। তবুও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বন্ধ রইল রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহিবির্ভাগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা না পেয়ে ফিরে গেলেন রোগীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে একজন চিকিৎসক, একজন নার্স ও একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছেন। চিকিৎসক সঞ্জীব সিমলান্দি ও নার্স সোনালি মুখোপাধ্যায় রামপুরহাটে থাকেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নীতা দাস থাকেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসনে। সোমবার থেকে শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্হিবিভাগ চালু থাকার কথা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বর্হিবিভাগের সামনে রোগীরা গিয়ে দেখেন, তখনও দরজা বন্ধ। তাঁরা নীতাদেবীর কাছে খবর নিতে যান। তিনি সাড়ে ১০টায় চিকিৎসককে ফোন করে জানতে পারেন, তিনি এ দিন আসছেন না। এরপরেই বিপাকে পড়েন রোগীরা। |
বন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম। |
নীতাদেবী জানান, “আমি তো চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। রোগী পরীক্ষা করতে বা ওষুধ দিতে পারব না। এই পরিস্থিতিতে আমাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলতে বারণ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক সঞ্জীব সিমলান্দি বলেন, “আমি অসুস্থ। তাই এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে পারিনি।” তিনি জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। তাই তিনি ও নার্স ৩ দিন করে ‘ডিউটি’ ভাগাভাগি করা নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার নার্সের থাকার কথা ছিল। তিনি না যাওয়াতেই এই সমস্যা। যদিও নার্স সোনালিদেবী এই ‘ডিউটি’ ভাগাভাগির কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “চিকিৎসক মাঝেমধ্যেই আসেন না। তখন আমাকেই রোগীদের সামলাতে হয়।” এ দিন কেন আসেননি? তাঁর দাবি, “আমি অসুস্থ। তা ছাড়া রাস্তা খারাপ থাকায় বাস অনিয়মিত চলাচল করছে।
ঘটনার কথা শুনে রামপুরহাট ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন্তকুমার মণ্ডল বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্র না খোলা নিন্দনীয় ঘটনা। চিকিৎসক, নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর কাছে চিঠি দিয়ে প্রকৃত কারণ জানতে চাওয়া হবে।” তাঁর প্রশ্ন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মীরা কী ভাবে আসবেন তাঁর ব্যবস্থা কি আমাকে করতে হবে? রামপুরহাটের মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “এমনটা হওয়া উচিত নয়। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অরুণলাল মণ্ডল বলেন, “ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকের থেকে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। যদি চিকিৎসক ও নার্সের বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |