এলাকায় একাধিক মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও সাফাই ও নিকাশি নিয়ে পুরসভার কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ তুললেন কুলটির বাসিন্দারা। পুর কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন জানানো হলেও ফল হচ্ছে না বলে দাবি এলাকাবাসীর। পুরসভার অবশ্য দাবি, মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ মেনে সাফাই ও নিকাশি ব্যবস্থায় গতি আনা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটি পুর এলাকায় এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টরাজের অবশ্য দাবি, তাঁরা দু’জনের নাম-পরিচয় পেয়েছেন। পুরসভার কাছে বাকি তিন জনের পরিচয় চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ডেঙ্গির সন্ধান মেলার পরে মহকুমা স্তরে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
ডেঙ্গি থেকে বাঁচতে নানা ব্যবস্থার কথা জানিয়ে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। এলাকা সাফসুতরো রাখা ও কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ পুরসভাগুলিকে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, ডেঙ্গির সন্ধান মেলার পরেও সাফাই ও নিকাশির বিষয়ে কুলটি পুর কর্তৃপক্ষ উদাসীন। পুর এলাকায় যেখানে সেখানে জঞ্জালের স্তূপ চোখে পড়েছে। মূল রাস্তার উপরেই ডাঁই হয়ে পড়ে আছে বহু দিনের পুরনো জঞ্জাল। পুরসভার বসতি অঞ্চলগুলিতে এখনও কাঁচা নর্দমা রয়েছে। কুলটির রানিতলা এলাকার বাসিন্দা সুব্রত গুহর অভিযোগ, “মাসে এক বারও সাফাই হয় না। একটু জোরে বাতাস বইলে জঞ্জাল ঘরে ঢুকে যায়।” কলেজ মোড় এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় কবিরাজ অভিযোগ করেন, চারদিকে জঙ্গল আগাছায় ভরে গিয়েছে। ফলে মশার উপদ্রব বেড়েছে। দিনের বেলাতেও মশারি টাঙাতে হয়। পুর কর্তৃপক্ষ এ সব জেনেও না জানার ভান করে রয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবি। কুলটির বিডিও পাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ ভান্ডারি একটি কাঁচা নদর্মা দেখিয়ে অভিযোগ করেন, এ রকম নর্দমা এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাঁর দাবি, “পুর কর্তৃপক্ষকে বহু বার পাকা নর্দমা তৈরি করে দেওয়ার আবেদন করেছি আমরা। কুড়ি বছরের পুরসভা এখনও এ সব করে উঠতে পারল না।”
পুরসভার সাফাই ও নিকাশি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পারিষদ তথা উপ-পুরপ্রধান বাচ্চু রায় বলেন, “এলাকার মানুষজনের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের দ্রুততার সঙ্গে সাফাই অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছি।” পুর কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসে অবশ্য ভরসা নেই এলাকাবাসীর। অনেক জায়গায় বাসিন্দারা নিজেরাই এলাকার সাফাই ও নিকাশিতে হাত লাগাচ্ছেন।
মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, আক্রান্ত অঞ্চলগুলিতে নজরদারি শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হচ্ছে। তিনি জানান, কুলটি এলাকায় সংগৃহীত কিছু রক্তে ডেঙ্গির জীবানু মেলেনি। তবে আরও কিছু রক্ত পরীক্ষার ফল আসতে বাকি আছে। পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার কাজ চালু থাকবে। |