যত্রতত্র জমে জঞ্জাল, ক্ষোভ নিকাশি নিয়েও
যেখানে-সেখানে জঞ্জালের স্তূপ। নর্দমার নোংরা জল উপচে ঢুকছে বাড়িতে। দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা দায়। এমনই অভিযোগ সালানপুর থানার রূপনগর এলাকার বাসিন্দাদের। বুধবার রাতে জ্বরে অসুস্থ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় সোনাই রায় (২৯) নামে ওই এলাকারই এক মহিলার। মৃতার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, ডাক্তারি পরীক্ষায় তাঁকে ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত বলে জানানো হয়েছিল। আসানসোল মহকুমার মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টরাজ জানান, রূপনগর এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা কী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর তার বিস্তারিত খোঁজখবর নেবে। প্রয়োজনে তাঁর পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দাদের রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই মহিলার মৃত্যুর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। তাঁদের অভিযোগ, রূপনারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে যত্রতত্র স্তূপিকৃত হয়ে থাকে জঞ্জাল। নিকাশি ব্যবস্থাও বেহাল। তার জেরে বাড়ছে মশার উপদ্রবও। সম্প্রতি আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। এর পরেও এলাকার সাফাই ও নিকাশি ঠিক মতো হয় না বলে অভিযোগ তাঁদের। এ দিন সাফাই ও নিকাশির দাবি জানিয়ে সালানপুরের বিডিও-র সঙ্গেও দেখা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কুলটির রানিতলায় জমে রয়েছে জঞ্জালের স্তূপ। —নিজস্ব চিত্র।
ডাবোর সংলগ্ন রূপনারায়ণপুর সব্জি বাজার অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে-সেখানে ছড়িয়ে রয়েছে জঞ্জালের স্তূপ। দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা বাপি মজুমদারের দাবি, “মাসে এক বার মাত্র জঞ্জাল সাফাই হয়। তাও ঠিক মতো ভাবে নয়। বাজার এবং আশপাশের এলাকায় পাহাড়প্রমাণ জঞ্জাল জমে থাকে।” সব্জি বাজার এলাকায় জঞ্জালের মাঝখানেই অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে একটি নলকূপ। সেখান থেকে মানুষজন পানীয় জল সংগ্রহ করছেন।
রূপনারায়ণপুর থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে পশ্চিম রাঙামটিয়ার আদিবাসীপাড়ার অবস্থা আরও সঙ্কটজনক। অঞ্চলটি কাঁচা নর্দমায় ভর্তি। নিকাশি বেহাল। নর্দমার জল উপচে এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতে ঢুকে যাচ্ছে। আবর্জনায় ভর্তি। ওই এলাকার বাসিন্দা সন্তোষ মণ্ডলের দাবি, “এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকেই আশপাশের অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। পঞ্চায়েত সমিতিকে বহু বার ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।”
মহাবীর কলোনি ও সামডি মোড়ের অবস্থাও প্রায় একই রকম। কোথাও কোথাও পাকা নর্দমার দেখা মিললেও নিকাশি যে বেহাল তা দেখেই বোঝা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা অরবিন্দ লায়েক অভিযোগ করেন, সাফাই ও নিকাশির আবেদন বহু বার জানানো হয়েছে পঞ্চায়েতের কাছে। কিন্তু কদাচিৎ দেখা মেলে সাফাই কর্মীদের।
মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গি ও অন্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে এলাকাকে জঞ্জালমুক্ত রাখা ও নিকাশির আবেদন জানানোর পরেও অবস্থার কেন পরিবর্তন হয়নি তা জানতে চাওয়া হলে সালানপুরের বিডিও জয়দীপ দাস বলেন, “রূপনগরের যে এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে, সেখানে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এলাকার সাফাই ও নিকাশির সমস্যাগুলি শুনেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।” জয়দীপবাবু আরও জানান, ডেঙ্গি ও মশাবহিত রোগের প্রকোপ থেকে এলাকাকে মুক্ত রাখতে বাসিন্দাদের সতর্ক করা প্রয়োজন। সেই উদ্দেশে ব্লক প্রশাসনের তরফে প্রচুর লিফলেট ছড়ানো হয়েছে। তবে সাফাই ও নিকাশি আরও জোরদার করার উদ্যোগ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির উপ-সভাপতি শ্যামল মজুমদার জানান, এলাকায় সাফাই ও নিকাশির অব্যবস্থার অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। সাফাই ও নিকাশির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ করার পাশাপাশি এলাকায় কীটনাশক প্রয়োগ ও স্বাস্থ্যকর্মী পাঠিয়ে জ্বরের কারণ জানা হবে জানিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
•o part or co•te•t of this website may be copied or reproduced without permissio•.