|
|
|
|
বিকল্প শিক্ষাকেন্দ্র চালু করার দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি |
‘এসো পড়াই কিছু করে দেখাই’স্লোগানকে সামনে রেখে উপকূলীয় এলাকা-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১১টি ব্লকের মৎস্যজীবী ও দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য চালু হয়েছিল ২৯টি বিকল্প শিক্ষা কেন্দ্র। কিন্তু সর্বশিক্ষা মিশন চলতি শিক্ষাবর্ষে বিকল্প শিক্ষাকেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় জেলায় স্কুলছুটের সংখ্যা ফের বাড়ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। বিকল্প শিক্ষাকেন্দ্রগুলি পুনরায় চালু করার জন্য রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা।
কিন্তু আচমকা বিকল্প শিক্ষাকেন্দ্রগুলি বন্ধ করা হলই বা কেন?
সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক পুষ্পেন্দু সরকার বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট বিকল্প শিক্ষাকেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীদের ২০১২-১৩ সালের মধ্যে প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসার কথা বলেছে। তাই রাজ্য শিক্ষা দফতর গত ফেব্রুয়ারি মাসে অলটারনেটিভ ইনোভেটিভ এডুকেশন সেন্টার বা বিকল্প শিক্ষাকেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দিয়ে সেখানে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের নিকটবর্তী প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থা অর্থাৎ সরকারি বিদ্যালয়ের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে।”
জেলার উপকূলীয় এলাকার মৎস্যজীবীরা সপরিবারে বছরের আট-নয় মাস খটিতে থাকেন। জনবহুল এলাকা থেকে বেশ কিছুটা দূরে সমুদ্র সৈকতের ওই খটিগুলির কাছাকাছি কোনও স্কুল না থাকায় দরিদ্র ওই পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় দাঁড়ি পড়ে যায় শৈশবেই। মূলত এদের কথা মাথায় রেখেই ২০০৯ সালে বিকল্প শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য মৎস্য দফতর জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। তৎকালীন জেলাশাসক ছোটেন ধেনদুপ লামার উদ্যোগে ২০০৯ সালে জেলার ১১টি ব্লকে ২৯টি বিকল্প শিক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়। চলতি বছর ওই ২৯টি শিক্ষাকেন্দ্রের প্রায় ১৪০০ পড়ুয়াকে নিকটবর্তী প্রাথমিক, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সর্বশিক্ষা মিশন। আচমকা শিক্ষাকেন্দ্রগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেনের। তিনি বলেন, ‘‘শুধু দরিদ্র মৎস্যজীবী পরিবার নয়, ইটভাটা, বিড়ি শ্রমিক-সহ দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলির ছেলেমেয়েরা এর সুবিধা পেত। পুনরায় ওই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি চালু করার জন্য রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক ছোটেন ধেনদুপ লামার কাছে চিঠি পাঠনো হয়েছে।” ‘হঠকারী এই সিদ্ধান্তে মৎস্যজীবী পরিবারের ছেলেমেয়েরা ফের স্কুলছুট হয়ে পড়ছে’ বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক লক্ষ্মীনারায়ণ জানা। মৎস্য দফতরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগও এই নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। |
|
|
|
|
|