|
|
|
|
বেআইনি গাড়ি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী জেলা প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সরকারি অনুমতির তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন রুটে ইচ্ছেমতো চলছে গাড়ি চালানো। আর তাতেই ঘটছে একাধিক দুর্ঘটনা। সম্প্রতি ঘাটালের একটি রুটে ১২জন যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময়ে এক অটো দুর্ঘটনায় মারা যান একজন। এরকমই কিছু অভিযোগ পেয়ে এবার টনক নড়েছে প্রশাসনের। জেলায় এই বেআইনি যানবাহনের বাড়বাড়ম্ত কমাতে অভিযান চালানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু অভিযোগ আসার পরে এই তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূলত অটো ও ট্রেকারের ক্ষেত্রেই বেশি সমস্যা রয়েছে। মোটর ভেহিকেলস বিভাগের আধিকারিকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকদেরও এ বিষয়ে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকান্তি সাইনি বলেন, “জেলার চারটি মহকুমাতেই অনুমতিহীন যান নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হবে।”
বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নানা ধরনের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। রাস্তা সংস্কার, মাটির বা মোরাম রাস্তাকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে পাকা করা প্রভৃতি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গ্রামগুলিকেও পাশ্ববর্তী রাজ্য সড়কের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এর সঙ্গেই গ্রামীন এলাকাতে বাস চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যে সব এলাকায় বাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না বা দিনে ১-২টির বেশি বাস চালানো যাচ্ছে না, সেখানে ট্রেকার বা অটো চালানোর অনুমতি দিচ্ছে সরকার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি অনুমতি ছাড়াই অনেকে অটো বা ট্রেকার চালানো শুরু করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর ফলে বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রথমত, রুট পারমিটের জন্য সরকারকে নির্দিষ্ট ‘ফি’ জমা দিতে হয়। নিয়মিত তা নবীকরণও করতে হয়। বিনা অনুমতিতে যানবাহন চালালে সে সব লাগে না। তাতে সরকারি রাজস্বের ক্ষতি হয়। এছাড়া বেশিরভাগ যুবকই ঋণ নিয়ে অটো বা ট্রেকার কেনেন। সরকারকে রাজস্ব দিয়ে তা নির্দিষ্ট রাস্তায় চালানোর অনুমতিও নেন। অথচ, দেখা যাচ্ছে সেই রাস্তায় অনুমতিহীন আরও ২-৩টি গাড়ি চলতে শুরু করেছে। ফলে সরকারি নিয়ম মেনে রাজস্ব দিয়ে যিনি গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অথচ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মুনাফা লুটছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকা এবং শহরাঞ্চল সবর্ত্রই এমন ঘটনা ঘটছে। এছাড়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবে গাড়ি কিনে ভাড়া খাটাচ্ছেন অথচ কিন্তু গাড়ি ভাড়া দিতে গেলে সরকারকে যে রাজস্ব দিতে হয় তা দিচ্ছেন না- এমন অভিযোগও উঠছে। জেলা স্তরে এ ক্ষেত্রেও এ বার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হল প্রশাসন। লক্ষ্য, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি। প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারি অনুমতি ছাড়া কেউ কোনও রুটে গাড়ি চালালে বা ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া দিলে তাকে ধরা হবে। জরিমানাও হবে। তবে নিয়ম মেনে সরকারি রাজস্ব দিয়ে রুটের অনুমতি চাইলে, ব্যবস্থা করে দেবে প্রশাসন। প্রশাসনিক কর্তারা সাফ জানিয়েছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বত্রই গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। তাই রুটের আবেদন করলেই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেউ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেআইনি ভাবে গাড়ি চালালে তা বরদাস্ত করা হবে না। টানা এই তল্লাশি চালানো হবে বলেও প্রশাসন জানিয়েছে। |
|
|
|
|
|