টোলগে ওজবে নিয়ে জট ছাড়াল না। উল্টে তা আরও বেড়ে গেল।
আর বেড়ে গেল বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গলকে দেওয়া রাজ্য ফুটবল সংস্থার চিঠিতে। লিগ পিছনো নিয়ে আইএফএ-র ব্যাখ্যায় একেবারেই সন্তুষ্ট হতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। কথা ছিল, টোলগে নিয়ে জট ছাড়ানোর জন্য লাল-হলুদ কর্তারা শুক্রবার তাঁকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন তাঁদের তাঁবুতে। কিন্তু আইএফএ-র ব্যাখ্যায় ক্ষুব্ধ ইস্টবেঙ্গল কর্তারা সেই বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন। যা দাঁড়িয়েছে, টোলগে কবে ইস্টবেঙ্গল থেকে মুক্তি পাবেন এবং মোহবাগানের জার্সি গায়ে তুলতে পারবেন তা নিয়ে ঘোরতর সংশয় তৈরি হয়েছে।
মামলা এখন আর শুধু টোলগের দলবদলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই প্রধানের সম্মানের লড়াই। মোহনবাগান টোলগেকে ছাড়া নামবে না। ইস্টবেঙ্গল টোলগেকে ছাড়বে না। দু’পক্ষই তাদের অবস্থানে অনড়। মাঝখানে আইএফএ-র ভূমিকায় জট আরও পাকিয়েছে। ইস্টবেঙ্গল মনে করছে, মোহনবাগানকে সুবিধা করে দিতেই আইএফএ লিগ পিছিয়ে দিচ্ছে। যাতে মোহনবাগান টোলগেকে নিয়ে নামতে পারে। আবার সবুজ-মেরুন কর্তারা প্রশ্ন তুলছেন, এত কথা হয়ে যাওয়ার পরেও ইস্টবেঙ্গল কেন টোলগেকে ছাড়বে না? কয়েক জন প্রভাবশালী মোহনবাগান কর্তা বৃহস্পতিবার রাতে এমনও ইঙ্গিত দিলেন যে, তাঁরা যুদ্ধ ছাড়বেন না। এমনকী আইএফএ থেকে যদি তাঁরা পছন্দসই বিচার না পান, তা হলে লিগে আদৌ দল নামাবেন কি না তা নিয়েও তাঁরা ভাববেন।
ম্যাচ পিছনো নিয়ে বৃহস্পতিবার আইএফএ-র দেওয়া উত্তরেই যে লাল-হলুদ কর্তারা আরও অনড় হয়ে গিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ক্লাবের প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “আইএফএ আমাদের একটা অনুবোধ করেছিল। মোহনবাগানও চিঠি দিয়েছিল। আমরা ফুটবলের স্বার্থে সেই মতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু যে ঘটনাটা ঘটল, তাতে আমরা খুব আঘাত পেয়েছি। আইএফএ-ও যে কারণ ব্যাখা করেছে, তাতে আমরা খুশি নই। তাই শুক্রবার টোলগের সঙ্গে আমরা বসছি না। ওকে সেটা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।” দু’এক দিনের মধ্যে আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি বসতে চাইছেন লাল-হলুদ কর্তারা। আর সেখানেও যদি রাজ্য ফুটবল সংস্থা ম্যাচ পিছনোর যথাযথ ব্যাখা দিতে না পারে, তা হলে টোলগেকে আর ক্লাব তাঁবুতে ডাকবেই না ইস্টবেঙ্গল। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে টোলগে নিয়ে আবার ‘ধীরে চলো নীতি’ নিতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগান অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত শুধু বললেন, “শুনেছি ওরা ই-মেল করে টোলগেকে জানিয়ে দিয়েছে বৈঠক হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।”
আশ্চর্যের হচ্ছে, লিগ না খেলার হুমকি গত কাল দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই হুমকি থেকে তারা এ দিন সরে এসেছে। দেবব্রতবাবু বলছিলেন, “যদি দেখি সত্যিই পুলিশ যুবভারতীতে ম্যাচ করার অনুমতি দিচ্ছে না, তা হলে লিগের ম্যাচ ইস্টবেঙ্গল মাঠে খেলতে পারি। তবে সেটা করতে পিডব্লিউডি-র অনুমতি লাগবে।” কিন্তু মোহনবাগান আবার টোলগে-বিতর্কের উপযুক্ত সমাধান না হলে লিগ বয়কটের ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে। কিছুতেই দু’পক্ষকে সমঝোতার এক সূত্রে বাঁধা যাচ্ছে না। |